
বগুড়ার শিবগঞ্জে "রহবল সমাজ উন্নয়ন সংস্থা" (আরএসডিএস) নামের এক সমিতির গ্রাহকদের অর্ধকোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আরাফাত রহমানের বিরুদ্ধে। এতে গ্রাহকদের মধ্যে উদ্বেগ আর চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। গত জুন মাসের ১৬ তারিখে এলাকা থেকে পালিয়ে গেছেন বলে জানান ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।
অভিযুক্ত আরাফাত রহমান শিবগঞ্জ উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের রহবল (বড়বাড়ি) এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে। ২০০০ সালে সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের রহবল বাজারের বড়িয়াহাট রোডে "রহবল সমাজ উন্নয়ন সংস্থা'র" কার্যালয়ে প্রায় এক মাস যাবৎ তালা ঝুলছে। অফিস বন্ধ থাকায় প্রতিদিন অসংখ্য গ্রাহক কার্যালয়ের সামনে ভিড় করছেন। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আরাফাতের ছবি দিয়ে তাঁর খোঁজে প্রচারণা চালাচ্ছেন। বেশ কয়েকজন গ্রাহক প্রায় একই রকম তথ্য দিয়ে জানান, আরাফাত আত্মগোপনে যাওয়ার আগেই গ্রাহকদের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন। নানা প্রলোভনে ফেলে বিভিন্নজনকে নগদ অর্থ ও বোনাস দেওয়ার আশ্বাসও দেন তিনি।
একাধিক ভুক্তভোগী জানান, কেউ ১ লাখ, কেউ ২ লাখ আবার কেউ বা ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত জমা রেখেছেন "রহবল সমাজ উন্নয়ন সংস্থা" নামের এই সমবায় সমিতিতে।
রহবল উত্তরপাড়া গ্রামের ভুক্তভোগী শামিম মন্ডল বলেন, "২০২২ সাল থেকে আমি পাঁচ ধাপে ৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা জমা রেখেছি। ২০২৪ সাল পর্যন্ত লভ্যাংশ ঠিকভাবেই পাইছি। কিন্তু কয়েকমাস হচ্ছে টাকা পাইনি। পরে জানতে পারি গত ১৬ জুন সমিতির পরিচালক আরাফাত গ্রাহকদের টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "আরাফাতকে খুঁজতে আমি ফেসবুকে তার ছবি দিয়ে পোস্টও করেছি। এখনো কোনো সন্ধান পাইনি। দুই একদিনের মধ্যে আমাদের সাথে যোগাযোগ না করলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করবো।"
রহবল হিন্দুপাড়া এলাকার ভুক্তভোগী ননী গোপাল এর স্ত্রী বলেন, "সমিতিতে আমরা ১ লাখ টাকা জমা রেখেছি। প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা করে লভ্যাংশ পেতাম। কিন্তু গত তিন মাসে কোনো টাকা পাইনি। পরে শুনি যে, সমিতির পরিচালক আরাফাত পালিয়ে গেছে। আমরা অনেক চেষ্টা করতিছি কিন্তু তার সন্ধান পাচ্ছি না।"
একই এলাকার ভুক্তভোগী চঞ্চল সাহা বলেন, "আমি ২ লাখ টাকা জমা রেখেছি সমিতিতে। এছাড়াও সমিতির পরিচালক আরাফাতের সাথে অনেক হিসাব নিকাশ ছিলো। কিন্তু গত জুন মাসের ১৬ তারিখ থেকে তিনি উধাও হয়ে গেছেন। এলাকায় আমার মত অনেক গ্রাহক আছে, যারা অনেক দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।"
শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহীনুজ্জামান মানবকণ্ঠকে জানান, এবিষয়ে এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Comments