Image description

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টাকা লুটের ঘটনায় জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকৃতদের মধ্যে রয়েছেন আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা ও সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদের ছোট ভাই, জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান।

বুধবার(৯ জুলাই) সকালে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সাময়িক বরখাস্তকৃত বাকিরা হলেন, টাঙ্গাইল জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম, সহকারী উপ-পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান। উল্লেখ্য, জিয়াউর রহমান ৫ আগস্টের পর টাঙ্গাইল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে যোগদান করেন।

গত ১৮ জুন সাবেক কাউন্সিলর ছালেহা বেগমের বাড়িতে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে এই টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ছালেহা বেগম অভিযোগ করেন যে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা তার বাড়িতে কোনো মাদক না পেয়ে প্রথমে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। ১০ হাজার টাকা দেওয়ার পর তারা চলে গিয়ে আবার ফিরে আসে এবং তার আলমারি ভেঙে নগদ ৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা এবং তার ছেলের আলমারি থেকে আরও ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা জোর করে নিয়ে যায়। টাকা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তাকে ও তার ছেলের স্ত্রীকে ভয়ভীতি দেখানো হয়।

এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার রাতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাসান মারুফের স্বাক্ষরিত আদেশে এই তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রধান কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। আদেশে উল্লেখ করা হয় যে, টাকা আত্মসাতের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ধারা ১২ এর উপধারা ১ মোতাবেক তাদের চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

ছালেহা বেগম এই অভিযানের মূলহোতা সহকারী উপ-পরিদর্শক শামীম আল আজাদসহ আরও তিনজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, শামীমসহ আরও তিন সিপাই—ফরহাদ আলী, প্রবাল চন্দ্র সরকার ও আল মামুন তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন এবং খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। ছালেহা বেগম এই চারজনের কঠিন বিচার এবং তার লুট হওয়া টাকা ফেরত চেয়েছেন।

তিনি জানিয়েছেন, তিনি আজ বুধবার আদালতে মামলা করবেন, কারণ শুধুমাত্র সাময়িক বরখাস্তে তিনি ন্যায়বিচার পাবেন না বলে মনে করেন।

জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল হোসেন বলেছেন, অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় এই তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, শামীম এই ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।