Image description

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পেছাতে পরিকল্পিতভাবে 'মব' বা জনরোষ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সিনিয়র সাংবাদিক ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, "মবের সঙ্গে আলটিমেটলি নির্বাচন জড়িয়ে যাচ্ছে। নির্বাচন যাতে পেছানো যায়, সেজন্য পরিকল্পিতভাবে মবের পাশাপাশি নতুন নতুন এজেন্ডা সামনে আসছে।" সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সংবাদ বিশ্লেষণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মনজুরুল ইসলাম প্রশ্ন তোলেন, হঠাৎ করে মবের কারণে নির্বাচন হবে না, এই ইস্যু কেন? তিনি মনে করেন, রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া মব হয় না। মব ভায়োলেন্স দিন দিন শহর থেকে গ্রাম পর্যায়ে চলে গেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সাবেক সিইসি নুরুল হুদাকে গ্রেপ্তারের পর প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক স্ট্যাটাস প্রসঙ্গে মনজুরুল ইসলাম বলেন, "প্রধান উপদেষ্টা স্ট্যাটাস দেবেন কেন? তিনি তো নির্দেশ দেবেন। স্ট্যাটাস দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার কাজ না। তিনি নির্দেশ দেবেন—যারা মব ভায়োলেন্স করছে, তাদের গ্রেপ্তার করুন।"

তিনি আরও বলেন, সরকার স্পষ্ট করে বলছে না, যারা মব করে তাদের ধরে পুলিশে দিতে। অনেক জায়গায় পুলিশের উপস্থিতিতেই মব হচ্ছে, কিন্তু পুলিশকে মবকারীদের নিবৃত করতে দেখা যায় না। তিনি মনে করেন, পুলিশ ভয় পাচ্ছে যে নিবৃত করতে গেলে উল্টো তাদের চাকরি যাবে বা 'ফ্যাসিবাদের দোসর' বলে সিল দেবে। পুলিশ থেকে শুরু করে প্রশাসনের সবাই একটি রাজনৈতিক সরকার এলে বেঁচে যাবে, এমন অপেক্ষায় আছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেন, সব রাজনৈতিক শক্তি যদি একত্রিত হয়ে নির্বাচন চায়, তখন মবটা কে করবে? যারা ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন চায় না বা নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায়, তাদের সঙ্গে মবের সম্পর্ক আছে কি না, এই প্রশ্ন আসতেই পারে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, এই মবের কারণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে না।

মনজুরুল ইসলাম বলেন, 'আমরা নির্বাচন চাই না'—এসব কথা না বলে কেউ বলছে না যে মবকে নিয়ন্ত্রণ করি। তিনি পরামর্শ দেন, সবাই মিলে মব নিয়ন্ত্রণে সরকারকে সাহায্য করা উচিত। রাজনৈতিক দলগুলো সচেতন হয়ে মবের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকলে মব আর হবে না।

নবীন নেতাদের আচরণ নিয়ে তিনি সমালোচনা করে বলেন, "২৫/২৬ বছরের একটা ছেলে ডিসিকে গিয়ে ধমক দেয়, এসপিকে গিয়ে ধমক দেয়।" তিনি এনসিপির একজন নেতার উদাহরণ টেনে বলেন, "তারা নাকি চিপায় পড়ে তাদের (ডিসি-এসপি) সমীহ করছে।" 

মনজুরুল ইসলাম মনে করেন, যাদের আমরা ভবিষ্যৎ নেতা মনে করি, তাদের শব্দচয়ন ও শিষ্টাচার সম্পর্কে আরও সচেতন হওয়া উচিত। "নেতা হওয়ার জন্য দরকার ব্যক্তিত্ব, লেখাপড়া, তার শব্দচয়ন–– মানুষ এ সব ফলো করে," যোগ করেন তিনি।