Image description

অবরুদ্ধ গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনী শুক্রবার ভোর থেকে ফের ভয়াবহ বিমান ও কামান হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় অন্তত ৪০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৫ জন মানবিক সহায়তার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। বার্তাসংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই হামলা এমন এক সময়ে চালানো হলো, যখন গাজা উপত্যকায় খাদ্য, চিকিৎসা ও নিরাপত্তার ভয়াবহ সংকট চলছে। 

শুক্রবারের ভোর থেকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস, রাফা ও আল-মাওয়াসি এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনী যুদ্ধবিমান ও গুলি করে হামলা চালায় গাজায় বাস্তুচ্যুতদের অস্থায়ী তাবু ও আবাসিক বাসস্থানের দিকে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, খান ইউনিসের পশ্চিমে আল-মাওয়াসি এলাকায় গৃহহীন ফিলিস্তিনিদের তাবু লক্ষ্য করে বিমান হামলায় এক পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য নিহত হন। একইভাবে, আল-মাওয়াসি-রাফায় কামান হামলায় আরও তাবু ধ্বংস হয়।

আনাদোলু এজেন্সিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আল-মাওয়াসি এলাকায় টাইবা টাওয়ারের কাছে একটি আশ্রয় শিবিরে সরাসরি হামলা চালানো হয়, যেখানে ওই সময় অনেকেই ত্রাণের আশায় অবস্থান করছিলেন। নিহতদের বেশিরভাগই ছিলেন একই পরিবারের সদস্য। এ ঘটনায় আরও অনেকে আহত হয়েছেন।

একই সময়ে, খান ইউনিস শহরের উত্তরে ইসরায়েলি বাহিনী একাধিক আবাসিক ভবন ধ্বংস করেছে বলে জানায় স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। এইসব ভবনে বেঁচে থাকা কিছু পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল। হতাহতদের উদ্ধার করতে গিয়ে উদ্ধারকর্মীরাও নিরাপদ ছিলেন না।

এর আগের দিন বৃহস্পতিবার গাজা উপত্যকাজুড়ে হামলায় আরও ১০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হন, যার মধ্যে ৫১ জন ত্রাণের জন্য অপেক্ষমাণ অবস্থায় প্রাণ হারান। ইসরায়েলি বাহিনী যুদ্ধ থামানোর আন্তর্জাতিক আহ্বানকে উপেক্ষা করে নির্বিচারে সহিংসতা অব্যাহত রেখেছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছে ৫৭,১০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, আহতের সংখ্যা ১ লক্ষ ৩৪ হাজারের বেশি। এমন পরিস্থিতিতেও ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধে কোনো সদিচ্ছা দেখাচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইসিসি (ICC)-তে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও তৎকালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়াওভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। সেই সঙ্গে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত আইসিজে (ICJ)-তেও গণহত্যার মামলা চলছে। তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি