
অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গত ৪৮ ঘণ্টায় ৩০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই সময়ে আহত হয়েছেন আরও শত শত ফিলিস্তিনি। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) গাজা সরকারের গণমাধ্যম দপ্তর এবং সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এই তথ্য জানিয়েছে।
গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় ২৬টি 'রক্তাক্ত গণহত্যা' সংঘটিত হয়েছে। এসব হামলায় আশ্রয়কেন্দ্র, ঘরবাড়ি, বাজার ও খাদ্যের সন্ধানে থাকা সাধারণ মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
আল জাজিরা গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, শুধুমাত্র গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৮ জন নিহত ও ৫৮১ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে নিহত হয়েছেন ৭৩ জন, যাদের ৩৩ জনই গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত খাদ্যসাহায্য কেন্দ্রে সহায়তা নিতে আসা সাধারণ মানুষ।
দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি এলাকায় একটি তাঁবুতে হামলায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন। গাজা শহরের পশ্চিমে মুস্তাফা হাফেজ স্কুলে বাস্তুচ্যুত মানুষরা আশ্রয় নিয়েছিলেন, সেখানে ইসরায়েলি হামলায় ১৬ জন নিহত ও আরও অনেকে আহত হয়েছেন।
আশ্রয় নেওয়া আহমেদ মনসুর নামে এক ব্যক্তি বলেন, "ভোরে ঘুম ভাঙে ভয়ঙ্কর বোমাবর্ষণে। মনে হচ্ছিল ভূমিকম্প হয়েছে। মিসাইলগুলো এত ধ্বংসাত্মক ছিল যে আগুন ধরে যায় চারপাশে। মানুষ আগুনে পুড়েই মারা গেছে।"
গাজা সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই হামলাগুলো সরাসরি বেসামরিক মানুষ, শিশু, নারী, আশ্রয়কেন্দ্র ও খাদ্যের সন্ধানে থাকা মানুষদের টার্গেট করে চালানো হয়েছে। আল জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজজুমের মতে, এই ঘটনাই গাজার মানবিক অবস্থার পুরোপুরি ভেঙে পড়ার জ্বলন্ত প্রমাণ।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বার্তাসংস্থা এপি জানিয়েছে, জিএইচএফ-এর নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে থাকা মার্কিন ঠিকাদাররা ক্ষুধার্ত মানুষের ভিড় ঠেকাতে তাজা গুলি ও স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করছে। দুইজন মার্কিন ঠিকাদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাদের 'অযোগ্য, অপরিচিত এবং অতিরিক্ত অস্ত্রধারী' বলে উল্লেখ করেছেন। তবে জিএইচএফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এপির রিপোর্ট পুরোপুরি ভিত্তিহীন এবং তাদের তদন্তে এর কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
Comments