Image description

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সরকারি সহায়তা (ভিজিএফ) কার্ডের অনলাইন আবেদন ও চাঁদা আদায় নিয়ে বিরোধের জেরে আব্দুল আজিজ (৩৫) নামে এক বিএনপি কর্মী খুন হয়েছেন। এই হত্যাকাণ্ডের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দলের আরেক কর্মী মাহাবুল মাস্টারকে (৫২) আটক করেছে র‍্যাব ও পুলিশ। বুধবার (২ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের স্কুল বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। 

নিহত আব্দুল আজিজ স্থানীয় খেলাফত উদ্দীনের ছেলে এবং বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। আটক মাহাবুল মাস্টার মথুরাপুর কলেজপাড়া এলাকার মৃত মৌলা বক্সের ছেলে। তিনিও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত। গত ১১ জুন অনুষ্ঠিত মথুরাপুর ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি হেরে যান।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মথুরাপুর কলেজপাড়া এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে পলাশের (৩২) সঙ্গে আব্দুল আজিজের ভিজিএফ কার্ডের অনলাইন আবেদন ও চাঁদা আদায়কে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। ঘটনার রাতে আজিজ স্কুল বাজার এলাকায় অবস্থান করছিলেন। এ সময় পলাশের ছুরিকাঘাতে আজিজ গুরুতর আহত হন এবং ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। ছুরিকাঘাতে তাঁর নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যায় বলে জানা গেছে। স্থানীয়রা তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করলেও পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। অভিযুক্ত পলাশ আটক মাহাবুল মাস্টারের ভাতিজা।

হত্যাকাণ্ডের পরপরই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠান।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, "ভিজিএফ কার্ডের অনলাইন আবেদন নিয়ে বিরোধ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। ঘটনার পরপরই র‍্যাব-পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে মাহাবুল মাস্টারকে আটক করে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। আটক ব্যক্তিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।"

কুষ্টিয়া র‍্যাব-১২-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত সরকার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। আটক মাহাবুল মাস্টারকে দৌলতপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

মথুরাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সুরাত আলী সেন্টু জানিয়েছেন, মাহাবুল মাস্টার তাঁদের রাজনৈতিক দলের সক্রিয় সদস্য এবং সাম্প্রতিক নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন, তবে তিনি কমিটির কোনো পদে নেই। তবে তিনি মাহাবুল মাস্টারের আটকের বিষয়ে নিশ্চিত নন বলে জানান।