Image description

চট্টগ্রামের পটিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সেই ঘটনার রেশ ধরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সেকেন্ড অফিসারের অপসারণের দাবি নিয়ে ডিআইজি কার্যালয়ের বাইরে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী জাকির হোসেন রোড অবরোধ করেছেন। এতে একেখান-জিইসিমুখী শতশত গাড়ি আটকা পড়েছে খুলশী থানার সম্মুখে। বন্ধ রয়েছে জিইসি থেকে একেখানমুখী যান চলাচল। অফিস ছুটির আগমুহূর্তে এনসিপির এমন কর্মসূচিতে কর্মজীবী মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।

বুধবার (২ জুলাই) বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে নগরীর জাকির হোসেন সড়কের খুলশী ৩ নম্বর এলাকায় এই কর্মসূচি শুরু হয়। বিকেল সাড়ে ৫টায় সবশেষ পাওয়া খবরে ওই কর্মসূচি চলছিল বলে জানা গেছে।

এনসিপি নেতাদের অভিযোগ, পটিয়ায় এক ছাত্রলীগ নেতাকে স্থানীয় জনতা আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলেও, তার বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। উল্টো এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে গেলে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ হামলা চালায়। এতে অন্তত কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।

অবস্থান কর্মসূচিতে নেতাকর্মীরা পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। কর্মসূচির কারণে সড়কে যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কর্মসূচি ঘিরে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কর্মসূচিটি শান্তিপূর্ণভাবে চলছিল।

এনসিপি চট্টগ্রাম মহানগর সংগঠক রিয়াদ বলেন, ‘যেখানে জনগণ এক দুর্নীতিগ্রস্ত ছাত্রনেতাকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে, সেখানে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে আমাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের ওপর চড়াও হয়েছে। এটি প্রমাণ করে পুলিশ বাহিনী এখন রাজনৈতিক রক্ষাকবচে পরিণত হয়েছে। তাই আমরা দ্রুত পুলিশ সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অন্যায়ের বিচার চাইতে ডিআইজি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছি। কথা বলার জন্য কোনো মিছিল বা স্লোগান ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে এসেছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেননি। তাই বাধ্য হয়ে সড়কে অবস্থান কর্মসূচি চালাচ্ছি। ভবিষ্যতে যদি আমরা কোনো কঠোর কর্মসূচি শুরু করি, তার দায়ভার সম্পূর্ণরূপে ডিআইজির উপরই বর্তাবে।’

চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা যেন বিঘ্নিত না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এদিকে, এনসিপি নেতারা পটিয়া থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের অপসারণ, হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের শাস্তি এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়ে তাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।

এর আগে, মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে চার পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশসূত্রে জানা গেছে, রাত ৯টার দিকে পটিয়ার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগ নেতা দীপংকর তালুকদারকে আটক করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। পরে তাকে পটিয়া থানা চত্বরে নিয়ে আসা হয়। তবে ওই ছাত্রলীগ নেতার নামে মামলা না থাকায় পুলিশ গ্রেফতার করতে চায়নি। এ নিয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের উত্তেজনা দেখা দেয় এবং পরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ ওই ছাত্রলীগ নেতাকে নিজেদের হেফাজতে নেয় এবং নেতাকর্মীদের লাঠিপেটা করে।