৫০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ডলারের মান, ট্রাম্পের নীতিকে দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা

গত অর্ধ শতাব্দীর মধ্যে ডলারের মান সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে, যা ১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় পতন। বিশ্লেষকরা এর জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগ্রাসী শুল্কনীতি এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী পররাষ্ট্রনীতিকে বিশেষভাবে দায়ী করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোর মুদ্রার বিপরীতে ডলারের মান ১০ শতাংশের বেশি কমেছে বলে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে।
ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতি, মূল্যস্ফীতির আশঙ্কা এবং ক্রমবর্ধমান সরকারি ঋণের মিশ্রণ ডলারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী আর্থিক ব্যবস্থার কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার ওপর আস্থা কমেছে।
১৯৭৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র স্বর্ণমান থেকে বেরিয়ে আসার পর ডলারের সবচেয়ে বড় দরপতন হয়েছিল। ট্রাম্প পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর ডলার ঊর্ধ্বমুখী ছিল। অনেক বিনিয়োগকারী আশা করেছিলেন যে, ট্রাম্প ব্যবসাবান্ধব ও প্রবৃদ্ধিমুখী হবেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগে বিপুল সুবিধা দেবেন। এতে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে এবং ডলারের চাহিদা বাড়বে বলে ধারণা করা হয়েছিল।
তবে এই প্রত্যাশা স্থায়ী হয়নি। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের সময় ডলার সূচক সর্বোচ্চ জায়গায় পৌঁছানোর পরই কমতে শুরু করে। নতুন প্রশাসন ব্যবসাবান্ধব হবে এমন আশা দূর হয়ে উচ্চ মূল্যস্ফীতির আতঙ্ক, উচ্চ সুদহারের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব এবং অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ওপর নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা শুরু হয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীরা এখন ধীরে ধীরে ডলার ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সম্পদের বিকল্প খুঁজছেন, যদিও এতদিন বৈশ্বিক বিনিয়োগের নিরাপদ গন্তব্য ছিল যুক্তরাষ্ট্র।
যদিও ট্রাম্প তার চরম শুল্ক আরোপের নীতি থেকে সরে এসেছেন এবং বছরের শুরুতেই যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজার ও বন্ডের বাজার ক্ষতি কাটিয়ে উঠেছে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের জি১০ বৈদেশিক মুদ্রা গবেষণার বৈশ্বিক প্রধান স্টিভ ইংল্যান্ডার বলেছেন, "ডলার দুর্বল না শক্তিশালী, এটা মূল প্রশ্ন নয়। মূল প্রশ্ন হলো, বিশ্ব আপনার নীতিগুলোকে কিভাবে দেখছে এবং এ সম্পর্কে কি বলছে?"
Comments