
গাজীপুর মহানগরের পূবাইল অঞ্চলে অবস্থিত প্রাকৃতিক জলাভূমি বেলাই বিল বর্ষা মৌসুমে এক আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। বর্ষার পানির সাথে সাথে মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরে উঠা এই বিল প্রতিদিনই শত শত ভ্রমণপিপাসু মানুষের পদচারণায় মুখরিত।
সম্প্রতি সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, রঙিন ছাউনি ও বৈদ্যুতিক আলোকসজ্জায় সজ্জিত বড় আকারের নৌকায় করে পর্যটকরা বিলের বুক চিরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এসব নৌকায় বসার পাশাপাশি হালকা খাবার, সংগীত ও বিনোদনেরও ব্যবস্থা রয়েছে। পরিবার-পরিজন বা বন্ধুদের নিয়ে অনেকেই প্রকৃতির মাঝে আয়োজনে মেতে উঠছেন।
পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবার মান নিশ্চিত করে নৌকা সার্ভিস পরিচালনা করছেন স্থানীয় উদ্যোক্তারা। নৌকায় ওঠানামার জন্য অস্থায়ী ঘাট তৈরি করা হয়েছে, সংরক্ষিত লাইফ জ্যাকেট ও পরিচ্ছন্নতার দিকেও নজর রাখা হচ্ছে।
স্থানীয় উদ্যোক্তা সাহেদ সরকার রাকিব, ‘মাটির কুটির’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। তিনি জানান, প্রতিদিনই এখানে পর্যটকদের ভিড় থাকে, বিশেষ করে শুক্র ও শনিবারসহ ছুটির দিনগুলোতে। পরিবেশের ক্ষতি না করে পর্যটকদের বিনোদনের ব্যবস্থা করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ঢাকা থেকে আগত এক পর্যটক বলেন, এত কাছে এমন সুন্দর একটি জায়গা রয়েছে, আগে জানতাম না। নৌকায় চড়া, হাওয়া খাওয়া আর প্রকৃতির সান্নিধ্য, সব মিলিয়ে অসাধারণ একটি অভিজ্ঞতা হলো।
বেলাই বিল ঘিরে শুধু নৌকা ভ্রমণ নয়, পর্যটকদের আকর্ষণে বাড়তি উদ্যোগও নিচ্ছেন স্থানীয়রা। কাছেই রয়েছে দেশীয় খাবারের আয়োজন। পুঁটি, টেংরা, কৈ, শিং, মাগুর, রুই-কাতলা সহ বিভিন্ন দেশীয় মাছ, পিঠা, মিষ্টান্নসহ ঐতিহ্যবাহী খাবার বিলের পাশের কুটির ঘর বা খোলা প্যান্ডেলে উপভোগ করছেন পর্যটকেরা।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, পরিকল্পিত উদ্যোগ ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বেলাই বিল গাজীপুরের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। পর্যটনের পাশাপাশি এটি ইতোমধ্যে স্থানীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
এলাকাবাসীর দাবি, এই বিলে যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রয়েছে, তা রক্ষা করে পর্যটনের সুবিধা আরও বাড়ানো গেলে এখান থেকে শুধু আনন্দই নয়, কর্মসংস্থানেরও বড় সুযোগ সৃষ্টি হবে। পরিকল্পিত উন্নয়ন ও সরকারি সহায়তা পেলে গাজীপুরে এটি হতে পারে একটি টেকসই পর্যটন কেন্দ্র।
Comments