Image description

চট্টগ্রামের রাউজানের নোয়াপাড়ায় ব্যক্তি উদ্যোগে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে নব নির্মিত মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন আরসিসি ঢালায় সড়ক এর উদ্বোধন করা হয়েছে। কমলার দিঘী থেকে কচুখাইন পর্যন্ত প্রায় ৩.৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ খানাখন্দে ভরা এই সড়ক নির্মাণ করেন প্রবাসী ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন ফাউন্ডেশন। 

২৭ জুন শুক্রবার সকালে সড়কের উদ্বোধন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জসিম উদ্দিনের পরিবারের সদস্যরা। 

উদ্বোধন শেষে স্থানীয় সামমাহালদার পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সুধী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জসিম উদ্দিনের বড় ভাই সমাজ সেবক ও ব্যবসায়ী আলহাজ্ব মোহাম্মদ রফিক।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেন, দেশ গড়ার কাজে গরীব ও দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ানো সবার দায়িত্ব। এই যে প্রবাসী ব্যবসায়ী জসিম যেভাবে দেশ ও সমাজের উন্নয়নে এগিয়ে এসে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন সেটি সবার জন্য অনুকরণীয়। 

তিন বলেন, এই সড়কটি শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থাই উন্নত করবে না, বরং স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রায় এনে দেবে নতুন গতি। সব এলাকায় সরকারের দিকে তাকিয়ে না থেকে বির্ত্তবানরা এভাবে এগিয়ে আসতে পারে তাহলে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

জেলা বিএনপি নেতা হাবিব উল্লাহ মাস্টারের সঞ্চালনায় এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন, ব্যবসায়ী মোখতার আহমদ, জেলা বিএনপি সরোয়ার আলমগীর, আবু জাফর চৌধুরী,হাজী মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন, ফিরোজ আহমদ, নুরুল হুদা, স্থানীয় বিএনপি নেতা আবুতাহের প্রমুখ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানাগেছে, বিগত সময়ে দীর্ঘদিন ওই সড়কটি সংস্কার কাজ না করায় এবং বন্যার পানিতে ডুবে গিয়ে স্থানে স্থানে খাদ হয়ে যায়। এতে যান চলাচলে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছিলো। একারণে দীর্ঘস্থায়ী টেকসই সড়ক করার এ উদ্যােগ নেন এলাকার কৃতি সন্তান প্রবাসী ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। এছাড়া স্থানে স্থানে যেসব সেতু- কালভার্ট সংকোচিত ছিলো সেগুলোর দুপাশে বিকল্প সেতু সংযোগ করে প্রশস্ত করা হয়।

আলহাজ¦ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ফাউন্ডেশন সূত্রে জানাগেছে, সড়কটি পাশে ১৭ থেকে ২১ ফুট পর্যন্ত প্রশস্ত করা হয়েছে। যা আগে ছিলো ১০ থেকে ১২ ফুট। পাশাপাশি স্থায়ী টেকসই করতে দুপাশে নির্মাণ করা হচ্ছে প্রতিরক্ষা দেয়াল এবং বন্যার পানিতে প্লাবিত না হতে দুই থেকে আড়াই ফুট উঁচু করে ভরাট করে ঢালায় দেয়া হয় পুরো চার কিলোমিটার সড়ক। এছাড়া পুরো সড়কজুড়ে বসানো হচ্ছে সড়ক বাতি, সিসিটিভি এবং লাগানো হবে দুপাশে হাজারও খেঁজুর গাছ এবং সড়কের ধারে স্থানে স্থানে সুপেয় পানির চাহিদা মেঠাতে বসানো হবে ১০ টি গভীর নলকুপ।

সড়কটির শুরু চট্টগ্রাম- কাপ্তাই সড়কের কমলারদিঘি পাড়ে স্থাপন করা হবে জনসাধারণের জন্য পাবলিক শৌচাগার এবং যাত্রি ছাউনি। এই কাজে প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে বলে ধারণা এলাকাবাসির। যা সম্পূর্ণ এককভাবে প্রবাসী ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের ব্যক্তিগত অর্থ্যায়ণে ব্যয় করা হয়। গত এপ্রিলের শুরু থেকে তিন মাস ধরে চলেছে এই সড়ক নির্মাণের কাজ। ২০০ এর বেশী শ্রমিক দিন রাত কাজ করেছে।

উল্লেখ্য, প্রবাসী ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন ফাউন্ডেশন এবং তাঁর বাবা মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত স্বে”ছাসেবী সংস্থা ইউনুছ-আলমাস ফাউন্ডেশন থেকে গত ২৫ ধরে ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন প্রতি বছর ১৫ হাজার দুস্ত পরিবারকে ২ মাসের খাদ্য সামগ্রী, ২৩০ টি পরিবারকে নতুন পাকা ঘর, ৩ হাজার ৬০০ পরিবারে ডেউটিন বিতরণ। শিক্ষার্থীদের মাঝে ৩৬০ টি বাই সাইকেল বিতরণ, ৫৫ জনকে অটোরিকশা বিতরণ, ৬৩ জনকে ওমরাহ হজ্বব্রত পালন, জেলা উপজেলায় মসজিদ ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা, মেয়েদের বিয়েতে এককালিন সহায়তা, বিনাসুদে আর্থিক ঋণ প্রদান, রোগীদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সেবা, ১০ হাজার মানুষের কোরআন শরীফ বিতরণ, ২ হাজার ৫০০ হিন্দু, বড়ুয়া ও বিভিন্ন জেলার দরিদ্র মানুষকে প্রতি বছর ২ মাসের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ হয়েছে।