আনজুমের নির্মম হত্যাকান্ড প্রমাণ করে আমরা কোন সমাজে বাস করছি : ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমার নিজ উপজেলায় নাফিজা জান্নাত আনজুম হত্যার মর্মান্তিক সংবাদ ঢাকা থেকে শুনতে পেয়েছি। এ খবর শুনে আমি অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছি। আজ আমি দুটি কারণে মেয়েটির বাড়িতে উপস্থিত হয়েছি, প্রথমতো মেয়েটির কবর জিয়ারত করা এবং তার পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করা। আমি মেয়েটির বাবার সাথে আলাপ করেছি, উনার কথা শুনে আমার বিবেকে আঘাত লেগেছে, এ নির্মম হত্যাকান্ড প্রমাণ করে আমরা কোন সমাজে বাস করছি? এই নিস্পাপ মেয়েটিকে হত্যা করে তার পরিবারের উপর যে জুলুম করা হলো, তা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
বাড়ির আঙ্গিনায় এলাকার শত শত মানুষের উপস্থিতিতে উচ্চকণ্ঠে জনতা স্লোগান দেয় “আনজুম হত্যাকারীর ফাঁসি চাই, দিতে হবে “ প্রতিবাদী জনতাকে সান্ত¡না দিয়ে এ সময় তিনি বলেন, আমরা এ নির্মম হত্যার বিচার চাই। আমরা ইতিমধ্যে লক্ষ্য করছি, এ মামলাটিকে প্রভাবিত করার জন্য একটি প্রভাবশালী মহল জালিমের পক্ষ নিয়েছে, যদি তাই হয় আমি কথা দিচ্ছি, আপনাদের নিয়ে আমরা জালেমের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলব ইনশাআল্লাহ। ২৭ জুন শুক্রবার সকালে কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের দাউদপুর এলাকায় হত্যাকান্ডের শিকার আনজুমের বাড়িতে আমীরে জামায়াত ডাঃ শফিকুর রহমান উপস্থিত হয়ে তিনি আরো বলেন ইতিমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে আমার কথা হয়েছে, আমি স্পষ্ট ভাবে তাদের বলেছি এই খুনিকে বাঁচানোর উদ্দেশ্যে এদিক ওদিক করলে তা সহ্য করা হবেনা। পুলিশের কলম যেন ন্যায়ের পক্ষে থাকে, মামলার আইও যাকে নিয়োগ করবে সেই তদন্তকারী কর্মকর্তা যেন কোনো নয়-ছয় না করেন। এ মজলুম পরিবারকে সহযোগিতা করলে দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণ সাধিত হবে।
এ সময় আমীরে জামায়াতে সাথে আরও উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, জেলা আমির ইঞ্জিনিয়ার মোঃ শাহেদ আলী, নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রহমান, জেলা সেক্রেটারি মোঃ ইয়ামীর আলী, ছাত্রশিবির জেলা সভাপতি নিজাম উদ্দিন কুলাউড়া উপজেলা সেক্রেটারি বেলাল আহমদ চৌধুরী, সহকারী সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম খান ও আলাউদ্দিন, ছাত্রশিবির উপজেলা সভাপতি আতিকুর রহমান তারেক প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ১২ জুন সকাল ৭টার দিকে শিক্ষার্থী আনজুম পার্শ্ববর্তী সিংগুর গ্রামে কোচিং করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। সে ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল খালিকের মেয়ে ও শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী। নিখোঁজের দুদিন পর ১৪ জুন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বাড়ির পাশের ছড়ার পাড়ে দুর্গন্ধ পেয়ে ভুক্তভোগীর ভাই ও মামা তার অর্ধগলিত মরদেহ খুঁজে পান।
এ ঘটনায় আনজুমের মা নাছিমা আক্তার বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ এ ঘটনায় পার্শ্ববর্তী দাউদপুর গ্রামের বাসিন্দা জাহির মিয়ার ছেলে জুনেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়।
Comments