Image description

বিগত বছরগুলোতে দেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিজে মানসম্মত সিনেমার একের পর এক মুক্তি পাচ্ছিল, যা দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে নতুন প্রাণ সঞ্চার করছিল। ফলস্বরূপ, দর্শকরাও হলমুখী হতে শুরু করেছিলেন। ঠিক যখন দেশের সিনেমাগুলো প্রাণ ফিরে পাচ্ছিল এবং চলচ্চিত্র শিল্পের নতুন সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছিল, তখনই এক চিরচেনা অভিশাপ—পাইরেসি—এই সম্ভাবনাকে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে।

পাইরেসির কারণে প্রযোজক ও নির্মাতারা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন, যা মানসম্মত চলচ্চিত্র নির্মাণে তাদের আগ্রহ কমিয়ে দিচ্ছে। একইসাথে হল মালিকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, কারণ দর্শকরা অনলাইনে বিনামূল্যে সিনেমা দেখতে পেলে হলে আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। এই পরিস্থিতি চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা এর বিকাশকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করছে।

তবে এই পাইরেসির থাবা অনেকটাই স্তব্ধ হয়ে এসেছিল আইনের কঠোরতায়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ফের তা ভয়ঙ্কর রূপে ফিরেছে। এ বছরের দুই ঈদের মুক্তি পাওয়া বেশিরভাগ সিনেমা-ই এখন পাইরেসির শিকার। তার মধ্যে রইয়েছে শাকিব খানের 'তাণ্ডব', 'বরবাদ', আফরান নিশোর 'দাগি', সিয়াম আহমেদের 'জংলি' এবং মোশাররফ করিম অভিনীত 'চক্কর ৩০২'-এর মতো আলোচিত সিনেমাগুলো। যেগুলো প্রেক্ষাগৃহে চলা অবস্থাতেই থার্ড পার্টি সাইটে ছড়িয়ে পড়ে।

এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে নিজের সিনেমা 'চক্কর ৩০২' পাইরেসির শিকার হওয়ায় ক্ষুব্ধ নির্মাতা ও অভিনেতা শরাফ আহমেদ জীবন। তাই তো সামাজিক মাধ্যমে উগড়ে দিলেন নিজের হতাশা আর ক্ষোভ।

জীবন লেখেন, 'আমাদের মনে রাখতে হবে, পাইরেসি বন্ধ করতে না পারলে দু-একটা সিনেমা হয়তো বিচ্ছিন্নভাবে ব্যবসা করতে পারবে, কিন্তু ইন্ডাস্ট্রি কোনোদিনই মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না। আমি আমার সর্বস্ব দিয়ে সিনেমা বানাব, আর কেউ শুধু পাইরেসি করে বসে বসে টাকা কামাবে—এটা হতে পারে না!'

তিনি আরও লেখেন, 'পাইরেসি একটা মহামারি, একটা যুদ্ধ। এটা একটা দণ্ডনীয় অপরাধ। আমরা ৭১-এ জিতেছি, কোভিডকেও জয় করেছি—এই পাইরেসির বিরুদ্ধেও জিতব। রাষ্ট্রকে দায়িত্ব নিতে হবে, সবাইকে এক হয়ে দাঁড়াতে হবে।'

সবশেষে জীবন লেখেন, 'আপনাকে অন্তত একবার বলতে হবে—আমি পাইরেসির পক্ষে নই। ধর্ষকের শাস্তি যদি মৃত্যুদণ্ড হয়, তাহলে পাইরেসির শাস্তিও মৃত্যুদণ্ড হোক! কারণ তারা আমাকে, আমার সিনেমাকে ধর্ষণ করছে—দিনে, রাতে, প্রতিমুহূর্তে!'