আগামীর বাংলাদেশ হবে জুলুম নির্যাতন ও অন্যায় দুর্নীতিমুক্ত নতুন বাংলাদেশ: মাওলানা আবদুল হালিম

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেছেন, আগামীর বাংলাদেশ হবে এক নতুন বাংলাদেশ যেখানে জুলুম, নির্যাতন, সন্ত্রাস, ক্ষুধা, দারিদ্র, অন্যায় ও দুর্নীতি থাকবে না। তিনি আজ ২৭ জুন জুমাবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলার তারাবো পৌর অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্য(রুকন) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আমীর মুহাম্মদ মমিনুল হক সরকারের সভাপতিত্বে জেলা সেক্রেটারী মুহাম্মদ হাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সদস্য সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরী আমীর মাওলানা আবদুল জব্বার, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ড. ইকবাল হোসাইন ভূইয়া,বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির নারায়ণগঞ্জ জেলার সহকারী সেক্রেটারি ও মিডিয়া সম্পাদক আবু সাঈদ মুন্না, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে, জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ইলিয়াস মোল্লা, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী আনোয়ার হোসাইন মোল্লা প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, এ দেশের মানুষ এক নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে। যেখানে অন্যায়, অনাচার, দখল, চাঁদাবাজি, গুম, খুন, ধর্ষণের মতো কদাচার থাকবে না। যে বাংলাদেশে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেকে স্ব স্ব অধিকার ভোগ করবে। সকল মানুষের অধিকার, মর্যাদা, নিরাপত্তা ও সন্মান নিশ্চিৎ করতে পারে কেবলমাত্র ইসলাম। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এমন এক কল্যাণময় শান্তি সুখের বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সংগ্রাম করছে।
তিনি আরো বলেন, ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনে পিষ্ট জনগণ আওয়ামী জুলুমের নিগড় থেকে মুক্তি পেতে যে ত্যাগ কুরবানী করেছে তা ভাষাতীত। আওয়ামী লীগ তাদের দুঃশাসনের মাধ্যমে গণ দুশমনে পরিণত হয়ে তাদের আদি ঠিকানা ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলের সতেরো বছরে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের লক্ষাধিক নেতাকর্মী দীর্ঘসময় কারাভোগ করেছে। কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করেছে শীর্ষ এগারো জন নেতাকে। কয়েক শত নেতা কর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আহত হয়ে অন্ধ, শ্রবণশক্তিহীণ হওয়া, পঙ্গুত্বের জীবনযাপন করছে পাঁচ হাজার নেতাকর্মী। এত জুলুম নির্যাতনের পরও জামায়াতে ইসলামীকে নত করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীক নিষিদ্ধ করেছিল, কিন্তু যারা নিষিদ্ধ করেছিল তারাই আজ দেশ থেকে চিরতরে নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে।
মাওলানা আবদুল হালিম আরো বলেন, জনগণ নতুন বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছে। আগামী নির্বাচনে জনগণ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে চায়, তাই ঘোষিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দিতে হবে।
সাইফুল আলম খান মিলন বলেন, জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিৎ করতে হবে। ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনে ঘটে যাওয়া গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান করতে হবে। জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র প্রকাশ এবং
বাস্তবায়ন করতে হবে। জুলাই অভ্যূত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন করতে হবে। প্রবাসীদের ভোট প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। এ সব দাবী আদায়ে তিনি সকলকে আরো সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
মাওলানা আবদুল জব্বার বলেন, নারায়ণগঞ্জ ছিল গড ফাদার, সন্ত্রাস, খুন, দখল আর চাঁদাবাজির স্বর্গরাজ্য। আগামীতে নারায়ণগঞ্জে নতুন কোনো গডফাদার, দখলবাজ, চাঁদাবাজকে মেনে নেওয়া হবে না।
সভাপতির বক্তব্যে মমিনুল হক সরকার বলেন, জামায়াতে ইসলামীর রুকনগণকে কুরআন সুন্নাহর আলোকে নিজেকে ব্যক্তি চরিত্র গঠনের পাশাপাশি একটি কল্যাণময় সমাজ গঠনে সর্বোচ্চ ত্যাগ কুরবানী করার দৃপ্ত শপথ নিয়ে ইসলামী আন্দোলনে ভূমিকা পালন করতে হবে।
Comments