Image description

নবজাতক শিশু কন্যাকে চিকিৎসা করাতে পটুয়াখালী নেয়ার পথে মা মোশাদ্দেকা বেগম (২৪), নানা মৌলুভী আজিজুল হক (৬৫) ও দাদী মা খালেদা বেগম (৫০) ইকরা লাক্সারী পরিবহন বাসের চাপায় নিহত হয়েছেন। শিশুসহ তিনজন আহত হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে শনিবার দুপুরে আমতলী-পটুয়াখালী মহাসড়কের কেওয়াবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে। এ ঘটনায় এলাকা ও পরিবারের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। 

জানাগেছে, কলাপাড়া উপজেলার গোলাখালী ইউনিয়নের বলইবুনিয়া গ্রাম থেকে বাবা মাওলানা জাহিদুল ইসলাম তার নবজাতক শিশু কন্যাকে ডাক্তার দেখাতে ইজিবাইকে শনিবার দুপুরে বাড়ী থেকে পটুয়ায়াখালী যাচ্ছিল। পথিমধ্যে আমতলী-পটুয়াখালী মহাসড়কের কেওয়াবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে কুয়াকাটাগামী ইকরা লাক্সারী পরিবহন (ঢাকা মেট্রো-ব ১৫-৮৯৫৩) যাত্রীবাহী ইজিবাইকটিকে চাপা দেয়। মুহুর্তের মধ্যে ইজিবাইকটি দুমড়ে মুরচে যায়। ওই ইজিবাইকে থাকা নবজাতক শিশুর নানা মৌলুভী আজিজুল হক, দাদী মা খালেদা বেগম ঘটনাস্থলেই নিহত হয় এবং শিশুটি, শিশুটির মা মোসাদ্দেকা বেগম, বাবা মাওলানা জাহিদুল ইসলাম, দাদা মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস ও ইজিবাইক ওহাব গাজী (৫২) চাল আহত হয়। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালে নেয়ার পরে চিকিৎসক ডাঃ মশিউর রহমান শিশুটির মা মোসাদ্দেকাকে মৃত্যু ঘোষনা করেছেন। 

অপর আহতদের ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে ইজিবাইক চালক ওহাব গাড়ী ও মাওলানা আব্দুল কুদ্দুসের অবস্থা আশঙ্কাজনক। খবর পেয়ে আমতলী থানার পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে নিহত আজিজুল হক ও খালেদা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন। নানা মৌলুভী আজিজুল হকের বাড়ী আমতলী উপজেলার পশ্চিম সোনাখালী গ্রামে।

প্রত্যক্ষদর্শী সোহেল হাওলাদার ও মেহেদী হাসান বলেন, কুয়াকাটাগামী বেপরোয়া গতির ইকরা লাক্সারী পরিবহনের গাড়ীটি পটুয়াখালীগামী ইজিবাইককে চাপা দেয়। চাপায় ইজিবাইকটি দুমড়ে মুরচে সড়কের পাশে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলে ইজিবাইকে থাকা যাত্রী একজন পুরুষ ও একজন নারী নিহত হয়। তারা আরো বলেন, ওই ইজিবাইক থেকে ঢুমায় পেচানো একটি কন্যা শিশুসহ আহত ৪ জনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

নিহত মোসাদ্দেকার স্বামী আহত মাওলানা জাহিদুল ইসলাম বলেন, নবজাতক শিশু কন্যা নিয়ে পটুয়াখালী ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছিলাম। আমার সাথে আমার স্ত্রী. শ্বশুর, দাদী, ফুকা ছিল। বেপরোয়া ইকরা পরিবহন গাড়ীটি আমাদের ইজিবাইকের ওপরে তুলে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই আমার দাদী ও শ্বশুর মারা যান। পরে স্থানীয়রা আমাদের উদ্ধার করে পটুয়াখালী হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ওই হাসপাতালে আমার স্ত্রী মারা যান। আমার শিশু কন্যাও আহত। তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

আমতলী থানার এসআই মোঃ জলিলুর রহমান বলেন, মরদেহ দুটি উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লে্েক্স আনা হয়েছে।  
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, নিহতদের হাসপাতালে আনার পুর্বেই মারা গেছেন। 

আমতলী থানার ওসি মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, নিহত দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে আনা হয়েছে। খবর পেয়েছি পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুটির মা মারা গেছে। তিনি আরো বলেন, ঘাতক গাড়ীটিকে জব্দ করা হয়েছে। চালক ও হেল্পার সকলে পালিয়ে গেছে।