
শিক্ষার্থী আন্দোলনের মুখে অবশেষে স্থায়ী বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ)। তবে কিছু শিক্ষার্থীকে শর্তসাপেক্ষে ক্লাসে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, আর কয়েকজনের অস্থায়ী বহিষ্কারাদেশ বহাল রাখা হয়েছে।
শনিবার (২১ জুন) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা রেজিস্ট্রার ড. মো. জুলফিকার রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের আপিল আবেদনের ভিত্তিতে তাদের বহিষ্কারের বিষয়টি পুনরায় পর্যালোচনা করা হয়েছে। পর্যালোচনা শেষে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, যেসব শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে স্থায়ী বহিষ্কারের আদেশ ছিল, তা প্রত্যাহার করা হবে। এর পরিবর্তে তাদের ‘সাসপেন্ডেড এক্সপালশন (শর্তসাপেক্ষ বহিষ্কার)’ শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এর ফলে তারা বর্তমান স্প্রিং ২০২৫ সেমিস্টার থেকে ক্লাসে অংশ নিতে পারবেন। তবে, ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে তাদের স্থায়ী বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
এদিকে, কয়েকজন শিক্ষার্থীকে দুই সেমিস্টার (স্প্রিং ২০২৫ ও সামার ২০২৫) পর্যন্ত বহিষ্কৃত রাখা হয়েছে। এই শিক্ষার্থীরা ফল ২০২৫ সেমিস্টার থেকে পুনরায় ক্লাসে যোগ দিতে পারবেন, তবে তাদের ক্ষেত্রেও ‘সাসপেন্ডেড এক্সপালশন’ বহাল থাকবে।
গত ২৬ ও ২৭ এপ্রিল উপাচার্য ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধানের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের জেরে এই বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়েছিল। তদন্তের পর গত ২ জুন মোট ৪১ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়; যার মধ্যে ২৪ জনকে স্থায়ী বহিষ্কার, ১৬ জনকে অস্থায়ী বহিষ্কার এবং একজনকে সতর্কবার্তা প্রদান করা হয়েছিল।
শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারকে "স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত" অভিযোগ করে ভুক্তভোগীরা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) স্মারকলিপি দেন। ইউজিসি এই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার এবং উপাচার্যকে সরানোর সুপারিশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিলেও, মন্ত্রণালয় এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
সরকারের এই নীরবতার প্রতিবাদে শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শিক্ষার্থীরা রাজধানীর নতুনবাজারে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন। পুলিশ লাঠিপেটা করলেও শিক্ষার্থীদের সরাতে পারেনি। পরে বিকেলে পুলিশের মধ্যস্থতায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয়, যেখানে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
Comments