Image description

বাংলাদেশের ইতিহাস নিরপেক্ষভাবে উপস্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেন, ২০২৪ সালের আগে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসসহ সবকিছু ছিল 'এক ব্যক্তি এবং এক দলকেন্দ্রিক'। তিনি অভিযোগ করেন, তখন শেখ মুজিবুর রহমানকে ইতিহাসের অবিসংবাদিত চরিত্র হিসেবে দেখানো হতো এবং তাঁর সমালোচনা করলে 'জামায়াত, শিবির, রাজাকার' বা 'সরকারবিরোধী, দেশবিরোধী' তকমা পেতে হতো।

শনিবার (২১ জুন) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে সারজিস আলম আরও বলেন, একইভাবে আওয়ামী লীগ বা সরকারের সমালোচনা করা গেলেও শেখ হাসিনাকে নিয়ে কিছু বলা যেত না। তাঁকে 'ফেরেশতা' হিসেবে উপস্থাপন করা হতো এবং তাঁর সমালোচনা করলে 'গুম, খুন কিংবা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডেরও সম্মুখীন' হওয়ার আশঙ্কা ছিল।

তিনি উল্লেখ করেন, 'তখন মনে হতো এমন কোনো সময় আসবে কিংবা এমন কিছু মানুষ কি থাকবে, যারা দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস অন্তত ১৯৪৭ থেকে শুরু করে ২০০৮ পর্যন্ত আমাদের সামনে তুলে ধরবে? সেই সুযোগ তখন ছিল না। এখন আছে।'

সারজিস আলমের মতে, বর্তমান প্রজন্ম চায় ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা, 'তিনি যেকোনো দল, মত, ধর্ম, বর্ণ কিংবা ক্ষেত্রের হোক না কেন, তাদের যোগ্য জায়গায় স্থান দিতে হবে।' তাঁদের ভালো কাজগুলোকে প্রশংসা করতে হবে এবং সীমাবদ্ধতাগুলোকেও তুলে ধরতে হবে।

যারা ইতিহাস নিয়ে কাজ করেন, গবেষণা করেন, বা পড়াশোনা করেন, তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ১৯৪৭ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রতিটি বাঁকের ইতিহাস চুলচেরা বিশ্লেষণ করে নিরপেক্ষভাবে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা উচিত। এতে জনগণ কোনটা গ্রহণ করবে আর কোনটা করবে না, সেই বিচার তারাই করতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, 'হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, শেখ মুজিবুর রহমান, তাজউদ্দীন আহমেদ, জিয়াউর রহমান থেকে শুরু করে যাদের যতটুকু অবদান সেগুলো তুলে ধরতে হবে। পাশাপাশি তাদের সীমাবদ্ধতাগুলোকেও সামনে নিয়ে আসতে হবে।' এই সীমাবদ্ধতাগুলো থেকে শিক্ষা নেওয়ার উপরও তিনি জোর দেন।

সারজিস আলমের মতে, 'কাউকে ফেরেশতা বানানোর প্রয়োজন নেই, আবার কাউকে উপেক্ষা করারও প্রয়োজন নেই। ইতিহাসকে ইতিহাসের মতো করেই চলতে দিতে হবে।'