শরিয়তপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনের একটি আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে তাকে এক নারীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা গেছে, যা নিয়ে জেলাজুড়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

শুক্রবার (২০ জুন) সকালে প্রবাসী সাংবাদিক জাওয়াদ নির্ঝর তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও টেলিগ্রাম চ্যানেলে জেলা প্রশাসকের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও পোস্ট করেন। ফেসবুক পোস্টে তিনি দাবি করেন, ডিসি আশরাফ উদ্দিন এই ছবি ও ভিডিওগুলো নিজেই তুলেছেন এবং ওই নারীকে বিয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। এখন তিনি বিয়ে না করে উল্টো হুমকি দিচ্ছেন।

ভাইরাল হওয়া ৫৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন শার্টের বোতাম খোলা অবস্থায় লাল-হলুদ রঙের পোশাক পরা এক নারীকে কোলে নিয়ে চুম্বন করছেন। এছাড়া ভিডিওর মাঝে মোবাইল ভিডিও কলে থাকা অবস্থায় তাকে ওই নারীকে নিজের বিশেষ অঙ্গ প্রদর্শন করতেও দেখা গেছে।

ভিডিওতে থাকা নারী, পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদমাধ্যমকে জানান, ডিসি আশরাফ উদ্দিন তার নিকটাত্মীয়। তিনি তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করিয়েছেন। ওই নারী অভিযোগ করেন, ডিসি তার সংসার ও সমাজ ধ্বংস করে তাকে পথে বসিয়েছেন এবং এখন তাকে বিয়ে না করে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন। এর আগেও ডিসি তাকে শারীরিকভাবে মারধর করেছেন বলেও তিনি দাবি করেন। ২৫ বছরের বিবাহিত জীবনে তিনি কোনো সম্পর্কে জড়াননি জানিয়ে বলেন, ডিসি তাকে মানসিকভাবে ব্ল্যাকমেইল করে নিজের প্রতি আসক্ত করেছেন এবং এখন কলঙ্কিনী বানিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি এই ঘটনার বিচার চেয়েছেন।

জেলা প্রশাসকের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও প্রকাশের পর স্থানীয় মহলে তীব্র ক্ষোভ ও সমালোচনা দেখা দিয়েছে। জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, "ডিসি তার চরিত্র ধরে রাখতে পারেননি। ডিসির কাছ থেকে এ ধরনের কাজ কেউ প্রত্যাশা করে না। তার এমন অপ্রত্যাশিত ভিডিও বা ছবি ভাইরাল হবে এটা আমরা বা জনগণ কেউ প্রত্যাশা করিনি।"

এ বিষয়ে জানতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনের মুঠোফোন ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর শরিয়তপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেন। এর আগে তিনি ২৭তম বিসিএস ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়ে নিউরো ডেভেলপমেন্ট ও প্রতিবন্ধী ট্রাস্টের পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।