
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) একটি ম্যুরাল 'অঞ্জলি লহ মোর' ভেঙে ফেলা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ ভবন এবং পুরাতন কলা অনুষদ ভবনের মাঝামাঝি পুকুরের অংশে স্থাপিত এই ভাস্কর্যটি ভাঙার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছেন প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী, নৃত্য পরিচালক, নৃত্য প্রশিক্ষক ও অভিনেত্রী মুনমুন আহমেদ নিজেই।
ম্যুরালটি মুনমুন আহমেদের হাতের ছবি থেকে তৈরি করেছিলেন ভাস্কর্যবিদ মনিন্দ্র পাল। একজন নারী দুহাত সংযুক্ত করে অঞ্জলি দিচ্ছেন— এই ভাবনা বহন করত ভাস্কর্যটি।
ম্যুরাল ভাঙার একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করে মুনমুন আহমেদ লিখেছেন, "খুবই দুঃখজনক, এই মুহূর্তে সেটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যুরাল ‘অঞ্জলি লহ মোর’! যেটি আমার হাতের ছবি থেকে করা হয়েছিল। এটি ভাস্কর্যবিদ মনিন্দ্র পাল করেছিলেন।"
এই পোস্টের কমেন্ট বক্সে সংগীতশিল্পী-অভিনেতা পান্থ কানাই ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, "থামাবে তো পরের কথা, কেও প্রতিবাদও করবে না। দেখেন সব সেলিব্রিটি চিল্পিরা চুপ মাইরা গেছে। দেখেন দেখেন।" ম্যুরাল ভাঙার কারণ জানতে চাওয়া হলে মুনমুন আহমেদ উত্তরে লিখেছেন, "দেশে কোন ভাস্কর্য থাকতে দেয়া হবে না!"। এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় অনেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। একজন লিখেছেন, "কি যে শুরু করেছে! এদেশের ইতিহাস শিল্প সংস্কৃতি সব ধ্বংস করে ফেলছে একদল মানুষরূপী দানব। ঘৃণা জানানোর কোন ভাষা নেই।" আরেকজন মন্তব্য করেছেন, "খুবই দুঃখজনক এবং ক্ষুব্ধ।"
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৪ কোটি টাকার অধিক ব্যয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুরগুলোর সংস্কার কাজ শুরু হয়। অনুষদ ভবনের সামনের পুকুরটির সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন মহল ও নতুন প্রশাসনের বিভিন্ন জনের আপত্তির কারণেই ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভাস্কর্যটি স্থাপন করেছিলেন দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের দায়ে অভিযুক্ত তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর।
এ বিষয়ে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করা ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জয়নুল আবেদীন সিদ্দিকী গণমাধ্যমকে বলেন, "এ বিষয়ে অনেক আগেই ডিনবৃন্দ ও সবাইকে নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এটা সম্ভবত সেই সিদ্ধান্তের কারণেই হচ্ছে। তখন তো অনেকগুলো বিতর্কিত কর্মকাণ্ড হয়েছিল, কেউ কেউ ভাস্কর্যটি নিয়ে তীব্রভাবে আপত্তি জানিয়েছিল। ফলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।"
Comments