Image description

গ্রামীণ টেলিকমের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘সমাধান সার্ভিসেস লিমিটেড’কে ক্যাশবিহীন ডিজিটাল ওয়ালেট বা ই-ওয়ালেট প্রযুক্তি সেবা দেওয়ার জন্য পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) হিসেবে লাইসেন্স দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এই অনুমোদন পেল প্রতিষ্ঠানটি। সোমবার (২ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্ট এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে।

 সার্কুলারে বলা হয়েছে, পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা আইন, ২০২৪-এর ধারা ৫(৪)-এর ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ ব্যাংক ‘সমাধান সার্ভিসেস লিমিটেড’-কে ২০২৫ সালের ২ জুন থেকে পিএসডি ও এডিসিঅ্যান্ডএল (সমাধান) শর্তসাপেক্ষে দেশের অভ্যন্তরে ই-ওয়ালেট সেবা দেওয়ার জন্য পিএসপি হিসেবে লাইসেন্স দিয়েছে।

‘সমাধান সার্ভিসেস লিমিটেড’ ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর পিএসপি লাইসেন্সের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রথম আবেদন করে। প্রতিষ্ঠানটি অনাপত্তিপত্র (এনওসি) পাওয়ার শর্ত পূরণ করলেও বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত বিলম্ব করে। পরে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সমাধানের এনওসি মঞ্জুর করে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গ্রামীণ টেলিকম ও এর প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথিত বিদ্বেষের পরিপ্রেক্ষিতে সমাধানের আবেদনটি নিয়ে এই বিলম্ব করা হয়েছে।

গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পদ থেকে আব্দুর রউফ তালুকদার পদত্যাগ করেন। নতুন গভর্নর হন ড. আহসান এইচ মনসুর। নতুন গভর্নর এসে আবেদনটি গ্রহণ করেন এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে শর্তসাপেক্ষে লাইসেন্স দেওয়া হয়।

সমাধান সার্ভিসেসের পরিচালনা পর্ষদে ৯ জন সদস্য আছেন, যারা প্রাথমিকভাবে গ্রামীণ টেলিকমের মনোনীত। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এম শাহজাহান গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান।

বর্তমানে দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লাইসেন্স পাওয়া আইপে সিস্টেমস, ডি মানি বাংলাদেশ ও রিকারশন ফিনটেকসহ আটটি পিএসপি রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর রবি ও বাংলালিংক ডিজিটাল ওয়ালেট নিয়ে আসতে আগ্রহী। দারাজ ও চালডালের মতো অনলাইন মার্কেট প্লেসগুলো ইতোমধ্যে পিএসপি লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে।

এছাড়াও, দেশে মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোও কেনাকাটা, বিল পরিশোধ ও লেনদেন সুবিধা দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনপ্রাপ্ত ১৬টির মতো ব্যাংক এই সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: ব্র্যাক ব্যাংকের বিকাশ, ডাচ্-বাংলার রকেট, ইসলামী ব্যাংকের এম ক্যাশ, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের উপায়, সাউথইস্ট ব্যাংকের টেলিক্যাশ, ওয়ান ব্যাংকের ওকে, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের মাই ক্যাশ, প্রাইম ব্যাংকের প্রাইম ক্যাশ, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের স্পট ক্যাশ, ট্রাস্ট ব্যাংকের মোবাইল মানি, মেঘনা ব্যাংকের ট্যাপ এন পে। এছাড়া রূপালী, ফার্স্ট সিকিউরিটি, বাংলাদেশ কমার্স, এনসিসি ও যমুনা ব্যাংক শিওর ক্যাশ সেবা দিচ্ছে।