Image description

বাগেরহাটের দশানী-রামপাল-মোংলা আঞ্চলিক মহাসড়কের দশানী থেকে হেলাতলা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশার কারণে স্থানীয় জনসাধারণ, যানবাহন চালক ও যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণকাজ আটকে থাকা, অসংখ্য গর্ত এবং ধুলায় ভরা এই রাস্তাটি এখন কার্যত অচলাবস্থার মুখে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ অবশেষে এই প্যাকেজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান 'মাহাবুব ব্রাদার্স'-এর চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জানা যায়, ২০২২ সালের আগস্টে ৩৩.৮৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও সংস্কার প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল। ৪৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পে ৮টি সেতু ও ২১টি কালভার্ট নির্মাণের পরিকল্পনা থাকলেও, দশানী থেকে হেলাতলা পর্যন্ত প্রথম প্যাকেজের কাজ পেয়েছে 'মাহাবুব ব্রাদার্স'। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও প্রতিষ্ঠানটি মাত্র ১৫ শতাংশ কাজ শেষ করতে পেরেছে। দুই দফা সময় বাড়ানো হলেও কাজের গতি বাড়েনি, যা স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

স্থানীয়রা জানান, সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। ইজিবাইক, মাহেন্দ্র ও ভ্যানচালকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাদের আয়ের একটি বড় অংশ গাড়ির যন্ত্রাংশ মেরামতে চলে যাচ্ছে। 

ইজিবাইক চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, "পেটের দায়ে রোজ রাস্তায় গাড়ি চালাতে হয়, কিন্তু রাস্তায় অতিরিক্ত গর্ত থাকায় গাড়ির অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। প্রতিদিন যা আয় হয় তার অধিকাংশই খরচ হয়ে যাচ্ছে গাড়ি সারাতে গিয়ে।" 

মির্জাপুর গ্রামের বাসিন্দা রহমত হোসেন জানান, সড়কের ঝাঁকুনির কারণে সম্প্রতি এক গর্ভবতী নারী চলন্ত গাড়িতেই সন্তান প্রসব করেন।

বাগেরহাটের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, প্রথম প্যাকেজের কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক না হওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটিকে পূর্ণরূপে কাজ শুরু করার জন্য ২৮ দিনের সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে সেই সময়সীমা পার হওয়ায় সড়ক বিভাগ চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খুব দ্রুতই নতুন দরপত্র আহ্বান করা হবে এবং বর্ষার মৌসুম শেষে পূর্ণরূপে কাজ শুরু হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।