
বাংলাদেশ থেকে বেশ কিছু পণ্য আমদানিতে আবারও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। গত শনিবার দেশটির বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এতে বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যের অর্ধশতাধিক খাদ্যদ্রব্য, বর্জ্য তুলা ও সুতার ট্রাক লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থলবন্দরে আটকে গেছে।
সোমবার সকালে বুড়িমারী স্থল শুল্ক (কাস্টমস) ও বুড়িমারী স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এসব তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে। এর আগে গত ৮ এপ্রিল অপর এক নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ হয়ে যায় সড়কপথে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি।
সূত্র জানায়, গত শনিবার (১৭ মে) ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য (উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ) আইনের ধারা প্রয়োগ করে আমদানি ও বন্দর সীমাবদ্ধতা নীতি, ২০২৫-২৬ কার্যকর করে। জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে রেডিমেড গার্মেন্টস পোশাক, ফল/ফলের স্বাদযুক্ত কার্বনেট পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য আইটেম স্ন্যাকস, চিপস ও মিষ্টান্ন, তুলা-সুতা, প্লাস্টিক, পিভিসি ও কাঠের আসবাব বাংলাদেশ থেকে বন্দর দিয়ে আমদানিতে বিধিনিষেধ দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী স্থলবন্দরের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ভারত হয়ে নেপাল-ভুটানে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে এ বিধিনিষেধ প্রযোজ্য হবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের চ্যাংড়াবান্দা স্থলবন্দরের মাধ্যমে সে দেশে (ভারতে) ফলের স্বাদযুক্ত কার্বনেট পানীয় (জুস), প্রক্রিয়াজাত খাদ্য আইটেম স্ন্যাকস, চিপস ও মিষ্টান্ন, বর্জ্য তুলা-সুতা এবং কিছু প্লাস্টিক, পিভিসিজাতীয় পণ্য রপ্তানি করা হয়।
কিন্তু ভারত সরকার তাদের দেশে এসব পণ্য আমদানিতে নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করায় এই স্থলবন্দরে ২০টি পণ্যবোঝাই গাড়ি রপ্তানির অপেক্ষায় থেকে আটকে গেছে। এতে এসব গাড়ি নিয়ে রপ্তানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট পড়েছে বিপাকে।
এ বিষয়ে ভারতে খাদ্যদ্রব্যের রপ্তানিকারকের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মেসার্স ট্রেড সিন্ডিকেটের স্বত্বাধিকারী রেকায়েত হোসেন লাবু বলেন, ‘ভারতীয় নিষেধাজ্ঞায় বুড়িমারী স্থলবন্দরে ফলের জুস, বিস্কুট ও নুডলসের ১৩টি গাড়ি আটকে আছে। অন্যান্য রপ্তানি পণ্যের গাড়িও এ বন্দরে আটকে আছে। গাড়িগুলো পাঠানো সম্ভব না হওয়ায় রপ্তানিকারক ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন।’
সুত্র মতে, স্বাদযুক্ত ও কার্বনেটেড পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যসামগ্রী, তুলা ও সুতির সুতার বর্জ্য, প্লাস্টিক ও পিভিসি তৈরিপণ্য আমদানি, নিজস্ব শিল্পের জন্য ইনপুট তৈরি করে এমন রঙিন পদার্থ, রং, প্লাস্টিসাইজার, কাঠের আসবাবপত্র ও অন্যান্য পণ্য আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামের কোনো স্থল কাস্টমস স্টেশন (এলসিএস)/ ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট (আইসিপি) এবং পশ্চিমবঙ্গের (এলসিএস) চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ি দিয়ে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। তবে, বাংলাদেশ থেকে মাছ, এলপিজি, ভোজ্যতেল এবং চূর্ণী পাথর প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য নয় বলা হয়েছে।
বুড়িমারী স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মেহেদী হাসান বলেন, ‘ভারত কর্তৃক বাংলাদেশ থেকে কিছু পণ্য রপ্তানি করার বিধিনিষেধ আরোপের জারি করা বিজ্ঞপ্তি দেখেছি। রপ্তানি পণ্যের গাড়িগুলো সকালে স্থলবন্দরের শেডে প্রবেশ করে। নিষেধাজ্ঞার কারণে আজ প্রবেশ করেনি। ব্যবসায়ীরা তাঁদের ব্যক্তিগত হেফাজতে রেখেছেন।
Comments