Image description

৪০ বছর ধরে মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন শরীফ বাঁধাইয়ের কাজ করছেন ষাটোর্ধ্ব মো.শাহে আলম। গত ৪০বছর ধরে পায়ে হেঁটে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কোরআন শরীফ বাঁধাই করলেও বর্তমানে বয়সের ভারে কোথাও যেতে না পেরে ঘরে বসেই বাঁধাই কাজ করছেন শাহে আলম। আর এতে যেই রোজগার হয় তা দিয়েই কোন রকম সংসার চলে তার।

বলছি ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের চর যমুনা গ্রামের ৭নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আলী মিয়া মুন্সী বাড়ির মৃত ছৈয়দ উল্যাহ মুন্সীর ছেলে ষাটোর্ধ্ব মো.শাহে আলমের কথা। তিনি জীবনের পুরো সময় ধরে এ পেশার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। দুই ছেলে এক মেয়েসহ ৫জনের সংসার চলতো শাহে আলমের এই কাজে উপার্জনের টাকায় যদিও বর্তমানে ছেলেরা সংসারের হাল ধরেছেন। 

শাহে আলম জানান, আল্লাহকে রাজি খুশি করতেই তিনি এ পেশায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। তিনি প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর এ কাজে ব্যবহৃত বরমা, কাছি, সুই, সুতা, কাপড়, ছাপার কাগজ ও গামসহ নানা সরঞ্জাম নিয়ে পায়ে হেঁটে বেড়িয়ে যান উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে সারাদিনে ৫-৮ কোরআন শরীফ বাঁধাই করতে পারেন। এতে খুশি হয়ে যে যত টাকা দেয় তা নিয়েই ফিরে আসেন বাড়িতে তিনি জানান বাড়িতে এসে মাগরিবের নামাজ পড়েন। আর এভাবেই দৈনিক ৪শ থেকে ৬শ টাকা উপার্জন করতে পারেন।

মহান আল্লাহ শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর এ আসমানি কিতাব নাজিল করেছেন, যা মুসলমানদের পথ-প্রদর্শক। এ কোরআন শরিফ বাঁধাই করে তিনি জীবিকা নির্বাহ করছেন এবং এটাকে আল্লাহর নেয়ামত হিসেবেই দেখেন তিনি।

প্রতিটি কোরআন শরীফ বাঁধাই করলে ৫০ টাকা ১০০ টাকা অনেকে আবার ২০০ টাকাও দিয়ে থাকেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে কোরআন বাঁধাই করে দৈনিক ৩০০-৪০০ টাকা আয় করেন তিনি। এ সামান্য আয় দিয়েই তিনি পাঁচ সদস্যের সংসার চালাচ্ছেন।

খুব যত্নসহকারে কোরআন শরিফ বাঁধাই করেন শাহে আলম। এতে একটি কোরআন শরীফ বাঁধাই করতে সময় লাগে প্রায় এক ঘন্টা। তবে একটু সময় নিয়ে খুব যত্ন সহকারে কোরআন শরীফ বাঁধাই করে থাকেন। একবার শাহে আলম এর হাতে বাঁধাই করলে পাঁচ বছরেরও আর বাঁধাই করতে হবে কোরআন শরীফ।

বর্তমানে বয়সের ভারে নানা রোগে বাসা বেধেছে তার শরীরে এখন আর আগের মত বাড়ি বাড়ি গিয়ে কোরআন শরীফ বাঁধাই করতে পারে না তাই সমাজের বিত্তবান ও সরকারি সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।