
বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সংলগ্ন সীমান্ত রক্ষায় ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) পশ্চিম ও পূর্ব কমান্ডের জন্য দুটি 'ফরোয়ার্ড হেডকোয়ার্টার' স্থাপন করা হবে। একই সঙ্গে ১৭ হাজার জওয়ানসহ ১৬টি নতুন ব্যাটালিয়ন গঠন সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সীমান্তে পশ্চিম ও পূর্ব কমান্ডের জন্য দুটি ‘ফরোয়ার্ড হেডকোয়ার্টার’ স্থাপন করা হবে। সরকারের একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ইতোমধ্যেই পরিকল্পনাটি নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদন মিললেই বিএসএফের জন্য এটি হবে একটি বড় ধরনের শক্তি বৃদ্ধি। গত বছর বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর পূর্ব সীমান্তে এবং ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে জঙ্গি হামলায় একাধিক সেনা নিহত হওয়ার পর পাকিস্তান সীমান্তে নজরদারি আরও জোরদার করার উদ্যোগ নেয় বিএসএফ।
নিরাপত্তা সংক্রান্ত সূত্রগুলো জানিয়েছে, শিগগিরই ১৬টি ব্যাটালিয়ন গঠনের অনুমোদন পেতে যাচ্ছে বিএসএফ। এসব ব্যাটালিয়ন আগামী কয়েক বছরের মধ্যে গঠন করা হবে। তবে এখনও কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনসহ কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। আশা করা হচ্ছে, খুব দ্রুতই সেসব অনুমোদন পাওয়া যাবে।
বর্তমানে বিএসএফ-এর মোট ১৯৩টি ব্যাটালিয়ন রয়েছে, যেগুলোর প্রত্যেকটিতে রয়েছে এক হাজারের বেশি সদস্য। নতুন ব্যাটালিয়নগুলো গঠিত হলে এতে যুক্ত হবেন প্রায় ১৭ হাজার নতুন জওয়ান।
সূত্র মতে, এই ব্যাটালিয়নগুলো মূলত ভারত-পাকিস্তান ও ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত থাকবে। এ ছাড়া বিএসএফের কার্যক্রমকে আরও সুসংহত করতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুইটি ফরোয়ার্ড হেডকোয়ার্টার গঠনের অনুমোদন দিয়েছে।
জম্মু ও পাঞ্জাবে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের নিরাপত্তা জোরদারে একটি হেডকোয়ার্টার স্থাপন করা হবে জম্মুতে। অপরটি স্থাপিত হবে মিজোরামে, বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধির লক্ষ্যে।
জানা গেছে, জম্মু সীমান্তে বর্তমানে বিএসএফের চারটি সেক্টর রয়েছে— রাজৌরি, সুন্দরবনি, জম্মু এবং ইন্দ্রেশ্বর নগর— যেগুলোর নেতৃত্বে রয়েছেন ডিআইজি পদমর্যাদার কর্মকর্তারা। অন্যদিকে আসামভিত্তিক মিজোরাম-কাছার ফ্রন্টিয়ারের অধীনে রয়েছে শিলচর, আইজল ও মণিপুরের সেক্টরগুলো।
সূত্র আরও জানিয়েছে, নতুন ব্যাটালিয়ন গঠনের অংশ হিসেবে বিএসএফ পুরুষ ও নারী সদস্যদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শিগগিরই শুরু করবে। এরপর শুরু হবে তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী পাঁচ থেকে ছয় বছরের মধ্যে এই ইউনিটগুলো সম্পূর্ণভাবে গঠন ও কার্যকর করা হবে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে বিএসএফ-এর মোট সদস্য সংখ্যা প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার। কয়েক বছর আগে বিএসএফ ২০ থেকে ২১টি ব্যাটালিয়ন গঠনের প্রস্তাব দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। পরে সরকার ১৬টি ব্যাটালিয়ন গঠনের বিষয়ে সম্মতি দেয়।
Comments