
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একটি লাইসেন্স ইস্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং টেলিভিশনে আলোচনার ঝড় বইছে। এ নিয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের প্রকাশ্যে মন্তব্য করে বলেন, “সাজিয়ে রাখার জন্য তো কেউ লাইসেন্স করে না”।
লাইসেন্সটি জুলকারনাইন সায়েরের হাতে না পড়লে ব্যবহার করা হতো কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “অবশ্যই সাজিয়ে রাখার জন্য তো কেউ নিশ্চয়ই লাইসেন্স করে না এবং লাইসেন্স করে সেটাকে আবার পরে এনলিস্টও করে না। একটা লাইসেন্স করা হয়েছে ব্যবসার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের এবং লাইসেন্সটাকে পরবর্তীতে একই মন্ত্রণালয়ে, যে মন্ত্রণালয় ওই ব্যক্তির পুত্র উপদেষ্টা, সেই মন্ত্রণালয়ের অধীনে এটাকে আবার তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। সুতরাং এটা যে একেবারেই একটা কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট অথবা স্বার্থের সাথে সাংঘর্ষিক বিষয়, সেটা নিশ্চয়ই বলার কোন অপেক্ষা রাখে না।”
জনাব বিল্লাল হোসেনের প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার লাইসেন্সটি ২০২৫ সালের ১৬ই মার্চ তালিকাভুক্ত হয়। এ বিষয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সাথে যোগাযোগ করেন সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের। আসিফ মাহমুদ জানান, তালিকাভুক্তির বিষয়টি ঠিক, তবে তিনি এ সম্পর্কে কিছু জানতেন না। তিনি বলেন, জনৈক ঠিকাদার তার শিক্ষক পিতাকে লাইসেন্স করাতে ও তালিকাভুক্ত করতে প্ররোচিত করেন। তবে এ লাইসেন্স ব্যবহার করে কোনো ধরনের কাজ করা হয়নি।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তার ফেসবুক পোস্টে লাইসেন্স ইস্যু নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং জানান, এটি তার মন্ত্রণালয় থেকেই বাতিল করা হয়েছে।
জুলকারনাইন সায়ের আরও বলেন, “আসিফ বলেন অথবা নাহিদ অথবা যারাই আছে ওখানে সাদিক, হাসনাত এদের প্রত্যেকেই আমি যথেষ্ট স্নেহ করি। অনেকের সাথেই আমার প্রায় রেগুলারলি কথাবার্তা হয়। এইতো কিছুদিন আগেও হাসনাতের সাথে অনেকক্ষণ কথা হয়েছে। গতকালকে রাতেও আমার সাথে সাদিকের কথা হয়েছে।
জুলকারনাইন বলেন, “যে লাইসেন্সটা আমার সামনে এসেছে, আমি লাইসেন্সটি পাওয়ার পর পরই কিছু তথ্য যাচাই করে আসিফকে ফোন করি এবং জিজ্ঞেস করি যে তোমার এই লাইসেন্সটা আমার কাছে আসছে,তুমি কি এটার বিষয়ে কিছু জানো? তো আমাকে বলে যে ভাই, আমি আসলে এরকম কোন লাইসেন্সের তথ্য জানি না। একটু সময় দেন, আমি একটু চেক করে আপনাকে জানাচ্ছি। তো সে কিছুক্ষণ সময় নিল। সময় নিয়ে আমাকে ফোন করে জানালো যে আসলে আমি খুব লজ্জিত, এই লাইসেন্সটা হয়েছে। আমি এটার বিষয়ে জানতাম না। আর আমি আমার বাবাকে বেশ রুঢ় ভাষায় বলেছি, আপনি এটা কেন করতে গেছেন? বাবা উত্তর দিয়েছেন যে তাকে কেউ প্ররোচিত করেছিল। কোন এক ঠিকাদার ওই ঠিকাদারের প্ররোচনায় পড়ে আসিফের শিক্ষক বাবা এই কাজটি করেন।”
তিনি বলেন, “আসিফ আমাকে গতকালকেই বলে যে এটা ব্যবহার করে কোন রকমের ঠিকাদারি কাজ অথবা এমন কিছুই করা হয় নাই। এবং আজকে যে আসিফ একেবারে পাবলিকলি ক্ষমা চাইল, আমার মনে হয় এটাই আমাদের পরিবর্তনের একটা অনেক বড় উদাহরণ। কারণ বিগত সরকারের আমলে অথবা বিগত রাজনৈতিক নেতৃত্বদেরকে আমরা দেখেছি, তাদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আসে, অনেক অন্যায় এবং জিজ্ঞাসা এবং প্রমাণিত হওয়ার পরেও তাদের মধ্যে কোন রকমের ভাব উদয় হয় না। সুতরাং আজকে আসিফ যে কাজটি করেছে, এটা অবশ্যই প্রশংসনীয় এবং আমি আশা করব যে তারা ভবিষ্যতে এমন কোন কাজে লিপ্ত হবে না, যা তাদের অবস্থান অথবা তাদের যে পরিবার আছে, এদের কাউকে বিতর্কিত করে।”
Comments