
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় হাওড় অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের দুর্ভোগ কমাতে তিতাস নদীর ওপর নির্মিতব্য একটি সেতুর কাজ দীর্ঘ পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি। প্রায় উনিশ কোটি টাকা ব্যয়ের এই সেতুর নির্মাণ কাজ ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে শুরু হয়েছিল। আড়াই বছর মেয়াদকালের এই প্রকল্পে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দুই দফা সময় বাড়ানোর পরও মাত্র ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছে।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, কৃষ্ণনগর, বনগজ ও ভবানীপুর এলাকার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০৮ মিটার দীর্ঘ এই সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। হাসান এন্টারপ্রাইজ নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ১৯ কোটি ২ লাখ ২৪ হাজার ২২৫ টাকা ব্যয়ে কাজটি শুরু করে। তবে, ২০২৩ সালের মে মাসে প্রকল্পের মূল মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও সেতুটির নির্মাণ কাজ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেনি।
এদিকে, সেতুটির সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য স্থানীয়দের মালিকানা জমি অধিগ্রহণ করা হলেও এখন পর্যন্ত জমির মালিকরা কোনো ক্ষতিপূরণ পাননি। এই ঘটনায় এলাকায় অসন্তোষ বিরাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সেতুটি নির্মিত হলে হাওড় অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন আসত। কিন্তু দীর্ঘসূত্রিতার কারণে তাদের দুর্ভোগ কমেনি বরং বেড়েছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হাসান এন্টারপ্রাইজের পক্ষ থেকে কর্মী সংকট ও বর্ষাকালে নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে নিয়মিত কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি করা হয়েছে। তবে, এলজিইডি কর্মকর্তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হওয়ার বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কবে নাগাদ এই সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে, তা নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা রয়েছে।
সরেজমিন খোঁজ নেয়ার সময় সুলতান মিয়া, খাজেরা খাতুন, আরব আলী ও জিয়াউর রহমানসহ এখানকার বেশকিছু মানুষ জানায়, এই ব্রিজের সংযোগ সড়ক ও ব্রিজের পাশে নতুন সড়ক নির্মাণের জন্য তাদের কয়েক একর জমি নিয়েছে সরকার। গত ৫ বছরেও জমির টাকা তাদের দেয়া হয়নি।
আখাউড়া উপজেলা প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম সুমন জানান, কর্মী সংকট দেখিয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সময় ক্ষেপণ করছে। ইতিমধ্যে দুই দফা সময় বাড়ানো হয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে এই কাজ সম্পন্ন হতে পারে বলে তিনি ধারণা করছেন।
তিনি বলেন, যাদের জমি নেয়া হয়েছে তা অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। অধিগ্রহণ কার্যক্রম শেষ হলে জমির মালিকরা টাকা পেয়ে যাবেন।
Comments