
বন্ধুত্ব একটি শব্দ নয়, বা একটি বাক্য নয়। বিশ্বাস, ভরসা, শ্রদ্ধা, সততা, সুখ-দুঃখ, হাসি-উল্লাস এমন সব শব্দকে যে একটি মাত্র শব্দে প্রকাশ করা যেতে পারে, তা হলো—বন্ধুত্ব। প্রকৃত অর্থে বন্ধু ছাড়া আমরা অচল। আমাদের জীবনে বন্ধু তো অনেক থাকে তবে ঘনিষ্ঠ বন্ধু কিন্তু একজনই থাকে। দুঃখের সময় হোক কিংবা আনন্দের সময় অথবা মন খারাপের দুপুরে কিংবা পরীক্ষার আগের দিন রাতে- একজন প্রকৃত বন্ধুকে সব সময় পাশে পাওয়া যায়। বন্ধুত্বের সম্পর্কটা হয়তো এমনটাই।
কখনও কোনও বিপদের সময় হোক কিংবা আনন্দের সময় কিংবা কোনও সিদ্ধান্ত নিতে- সকলেই একজন বন্ধুকে খোঁজেন। এই বন্ধুত্বের জন্য আলাদা একদিন হয় না। বন্ধুদের দিন বছরের সব দিনগুলো। তাও একটি বিশেষ দিন রয়েছে বন্ধুত্ব উদযাপনের জন্য। তা হল বেস্ট ফ্রেন্ড’ ডে। আজ ৮ জুন, বেস্ট ফ্রেন্ড ডে বা ঘনিষ্ঠ বন্ধু দিবস। ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ১৯৩৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস দিনটি চালু করে। এর পর থেকে সে দেশে প্রতিবছর এটি পালিত হচ্ছে।
ওয়াল্টার উইনচেল বলেছেন "সত্যিকারের বন্ধু তখন পাশে থাকে যখন আর কেউ থাকে না" -
ইংরেজ সাহিত্যিক স্যামুয়েল টেইলর কোলরিজ বন্ধুত্বকে বলেছেন, শেল্টারিং ট্রি বা আশ্রয়দাতা বৃক্ষ।
অবশ্য সব বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে এসব বক্তব্য খাটে না। গোটা জীবনজুড়ে হাজার হাজার বন্ধু হয়। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত থেকে যায় কজন! সত্যিকারের বন্ধু, প্রিয় বন্ধু, পরম বন্ধু, ইংরেজিতে যাকে বলে ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’ হয় হাতে গোনা।
গবেষণা বলছে, প্রতি ১২ জনে একজন হয় আজীবনের, হয় পরম বন্ধু। আবার একই সময়ে মানুষের দুইয়ের অধিক ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’ থাকে না। ঠিক যেন অনেকটা প্রেমের মতোই ব্যাপার। একসঙ্গে যেমন একাধিক প্রেম চলে না, তেমনই দুইয়ের অধিক ঘনিষ্ঠ বন্ধুও কিন্তু হয় না।
তবে একজন ভালো বন্ধু পাওয়ার প্রথম ও প্রধান শর্ত হলো বন্ধুত্বের সম্পর্কের মাঝে কোনো ধরনের স্বার্থ কিংবা প্রাপ্তির চিন্তা মাথায় না রাখা। মনে রাখবেন স্বার্থের প্রয়োজনে করা বন্ধুত্ব আপনাকে একটা সময়ে লাভবান করলেও চূড়ান্ত বিচারে আপনাকে করে তুলতে পারে নিঃসঙ্গ। এ কারণে কোনো ধরনের প্রাপ্তির চিন্তা থেকে নয়, বরং নিজের ভালোলাগা আর ভালোবাসাগুলোকে ভাগাভাগি করে নেয়াই হোক বন্ধুত্বের প্রথম দাবি।
দ্বিতীয়ত, বন্ধুত্বের মাঝে যেন ভুল বোঝাবুঝি বা মনোমালিন্য সহজেই স্থান করে নিতে না পারে সেজন্য নতুন করে বন্ধু হওয়ার মানসিকতাটুকু বোঝাও কম-বেশি জরুরি। এক্ষেত্রে শুধু যে সমমানসিকতাসম্পন্ন মানুষেরাই আপনার বন্ধু হবেন তেমনটা কিন্তু নয়, বরং নতুন বন্ধুর মানসিকতা যেমনই হোক না কেন তার প্রতি আপনার সহনশীলতা এবং আপনার মতের প্রতি তার সমর্থনই পারে একটা নির্ভেজাল বন্ধুত্ব গড়ে দিতে।
তাহলে আর দেরি কেন! আজকের দিনটি উৎসর্গ করুন আপনার প্রিয় বন্ধুটিকে। আজ চাইলে ঘুরে আসতে পারেন তাকে নিয়ে অথবা মুভি দেখতে পারেন । তবে এই বিশেষ দিনে অবশ্যই আপনার প্রিয় বন্ধুটিকে উপহার দিতে ভুলবেন না ।
মানবকণ্ঠ/আরএইচটি
Comments