
‘যে উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে সরকারের সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছিল, তা এখন স্তিমিত’, এমন মন্তব্য করে সিপিডির ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘দেশের ওপর এক রকম ঝড় বয়ে যাচ্ছে, যার প্রভাব মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনেও পড়েছে।’ সংস্কার কার্যক্রম মনিটরিং করতে সোমবার বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান বলেন, ৫৪ বছরেও দেশে সংস্কারের গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি তৈরি হয়নি।
২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের পর দেশে অর্থনীতি, শ্রম, স্থানীয় সরকারসহ বিভিন্ন খাতে ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। কিন্তু ১ বছরের বেশি সময় পর এসে সংস্কারের দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখছেন না গবেষকরা।
জনগণের চাহিদা ও তার ভিত্তিতে জরুরি ১৫ খাতের সংস্কারের অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং রাজনৈতিক সরকারকে জবাবদিহির জন্য বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ চালু করেছে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম।
শ্রম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা মনে করছি একটি পার্লামেন্টারি নির্বাচন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা তৈরি করবে। কিন্তু বাংলাদেশে অটোক্রেসি এখন সব জায়গায় দেখা যাচ্ছে। এগুলোতে যদি গণতান্ত্রিক না করতে পারেন তাহলে এগুলো কিন্তু কাজ করবে না।’
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘যে সব কমিটিগুলো হলো, যে সব কমিশন হলো, তার মধ্যে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, সংখ্যালঘু জনগণ এবং বিভিন্ন সুবিধাবঞ্চিত মানুষের প্রতিনিধিত্ব ছিল না। এর মধ্যে আমরা দেখতে পেলাম, যে সব সংস্কারের প্রস্তাব বিভিন্ন কমিটি ও কমিশন থেকে এল সেগুলো কোথায় যেন আর আগাতে পারল না।’
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হলে সামনের ৫ মাসেও বেশ কিছু সংস্কারের সুযোগ আছে। তালিকা করে এসব বাস্তবায়নে গুরুত্ব দেওয়ার তাগিদ বিশ্লেষকদের।’
এ সময় সিপিডির চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান বলেন, ‘কী কী সংস্কার হবে তা এখনো সুষ্পষ্ট হয়নি। কোন কোন দল বলছে সংস্কার না হলে নির্বাচনে অংশ নেবেন না, যা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। পরিতাপের বিষয় হলো, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও গ্রহণযোগ্য সংস্কার পদ্ধতি তৈরি হয়নি।’
মতবিনিময়ে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ বলেন, সংস্কার কমিশনের কার্যকারিতা দেশের ইতিহাসে নেই। রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণে সংস্কার এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ দেন আলোচকরা।
Comments