Image description

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা সরব হয়ে উঠেছেন। বড় ভোট ব্যাংক হিসেবে বিবেচিত চা-শ্রমিক ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষায় সক্রিয় রয়েছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।

প্রায় ৮৫১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ আসনে ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ৭৭ হাজারের বেশি। এর মধ্যে চা-শ্রমিক ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ই নির্ধারক ভূমিকা পালন করে আসছে। তাই সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থী
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব মুজিবুর রহমান চৌধুরী ও শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. মহসিন মিয়া মধু ধানের শীষ প্রতীকে লড়াইয়ে আগ্রহী। দলের ভেতরে দু’জনের অবস্থান দুই উপজেলায় আলাদা হলেও তৃণমূল পর্যায়ে দু’জনেরই সমর্থন রয়েছে।

এদিকে, দীর্ঘ ২৯ বছর পর এ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলের সিলেট মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট মো. আব্দুর রব এবার মাঠে রয়েছেন।

বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতা প্রীতম দাশ আলোচনায় রয়েছেন সংখ্যালঘু ও চা-শ্রমিক ভোটারদের মধ্যে।সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মো. সালেহ আহমদও সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী তোফায়েল লিটন চৌধুরী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, খেলাফত মজলিস, ইসলামী ফ্রন্ট ও ইসলামী ঐক্যজোটের একাধিক নেতা প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির অবস্থা
২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের ঘাঁটি বলে পরিচিত এ আসনে টানা পাঁচবারের এমপি উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদের রাজনৈতিক প্রভাব ভেঙে পড়ে। বর্তমানে তিনি কারাগারে থাকায় আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন স্থানীয় ভোটাররা।

অন্যদিকে জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। জেলা জাতীয় পার্টি সভাপতি আলহাজ্ব কামাল হোসেন জানিয়েছেন, কমিটি পুনর্গঠনের কাজ চলছে, প্রার্থী দেয়ার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

প্রার্থীদের বক্তব্য
আলহাজ মুজিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, “বিগত নির্বাচনে কারচুপির শিকার হয়েছি, শত শত মিথ্যা মামলার মুখোমুখি হয়েছি। তবুও দলের প্রতি অনুগত আছি। এবার দল আমার ত্যাগের মূল্যায়ন করবে।”

মো. মহসিন মিয়া মধু বলেন, “৫০ বছরের রাজনীতির অভিজ্ঞতা নিয়ে মাঠে আছি। দুঃসময়ে নেতাকর্মীদের সংগঠিত করেছি। সুযোগ পেলে জনগণ আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করবে।”

জামায়াতের প্রার্থী এডভোকেট আব্দুর রব বলেন, “মানুষ পরিবর্তন চায়। বৈষম্যহীন সমাজ ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গড়তে আমরা মাঠে আছি।”

এনসিপি নেতা প্রীতম দাশ বলেন, “আমরা নিয়মিত রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাচ্ছি। কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা পেলে প্রচারণায় নামব।”