
দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক মিত্র ও নির্বাচনের সঙ্গী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে দূরত্ব কমছে না। বরং তা আগের চেয়ে বেড়েছে। ৫ আগস্টের পর এই প্রবণতা শুরু হলেও সম্প্রতি লন্ডনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের সাক্ষাতের পর সম্পর্ক আর খারাপ হবে না বলে আশা করা হয়েছিল।
তবে দলীয় আদর্শ আর কৌশলের রাজনীতি তাদের দূরত্ব আরও বাড়িয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দু’দলের প্রথম সারির নেতাদের মধ্যে যোগাযোগের ঘাটতিও তৈরি হয়েছে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।
৫ আগস্টের পর থেকে রাজনীতির মাঠে নানা বিষয়ে দল দুটির মধ্যে স্পষ্ট মতবিরোধ দেখা দেয়। দু’দলের তৃণমূল থেকে শীর্ষ নেতাদের বক্তব্যে তা ফুটে উঠছে। দুই দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা, সরকারের সংস্কার প্রস্তাব, নির্বাচনের দিনক্ষণ, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক, প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে দলীয় লোকের বদলি, পদায়ন, নিয়োগ, দখল-চাঁদাবাজির মতো বিষয় নিয়ে চলছে বাগ্যুদ্ধ। সভা-সমাবেশ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তা দৃশ্যমান।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত রাজনীতিতে এ দুই দলেরই সাধারণ প্রতিপক্ষ ছিল আওয়ামী লীগ। বৃহৎ এ দলটির অনুপস্থিতিকে জামায়াত বড় সুযোগ হিসেবে দেখছে। পাশাপাশি অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতাদের অনেকের ওপর জামায়াত ও শিবিরের প্রভাব তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষী করে তুলছে। এর বাইরে প্রশাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং ব্যাংক খাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দলটির পরিকল্পিত অবস্থান তাদের সরাসরি বিএনপির সামনে এনে দাঁড় করিয়েছে।
বিএনপির একাধিক নেতা মনে করছেন, জামায়াত আগামী নির্বাচনে যে কোনো মূল্যে বিরোধী দল হওয়ার পরিকল্পনা মাথায় নিয়ে এগোচ্ছে। কেউ কেউ মনে করছে, জামায়াত নিজেদের দ্বিতীয় বড় দল হিসেবে জাহির করার চেষ্টা করছে। এ কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকায় জামায়াতকে বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াতেও দেখা যাচ্ছে।
Comments