
দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংকট নিরসনে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দলিল হিসেবে ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’-এর খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। শনিবার (১৬ আগস্ট) পাঠানো এই খসড়ায় মোট ৮৪টি দফা এবং সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য ৮টি অঙ্গীকারনামা রয়েছে। খসড়াটির ওপর কোনো রাজনৈতিক দলের মন্তব্য থাকলে তা আগামী ২০ আগস্ট বিকেল ৪টার মধ্যে জমা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
এই সনদের অঙ্গীকারনামায় ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এবং ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর সংবিধান সংশোধনের উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, জনগণের অভিপ্রায়কে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে নতুন একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দলিল হিসেবে এই সনদ প্রণয়ন করা হয়েছে।
সনদটিতে মোট ৮টি অঙ্গীকার রয়েছে যা বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি অঙ্গীকার হলো:
পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন: ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হিসেবে প্রণীত এই সনদের প্রতিটি দফা পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হবে।
সংবিধানে অন্তর্ভুক্তি: এই সনদের সকল বিধান, নীতি ও সিদ্ধান্ত সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। যদি বিদ্যমান সংবিধান বা অন্য কোনো আইনে কোনো ভিন্নতা থাকে তাহলে এই সনদের বিধানগুলোই প্রাধান্য পাবে।
বিচার বিভাগের এখতিয়ার: সনদের কোনো বিধানের ব্যাখ্যা সংক্রান্ত চূড়ান্ত মীমাংসার ভার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ওপর ন্যস্ত থাকবে।
আইনি বৈধতা: এই সনদের প্রতিটি বিধান, প্রস্তাব ও সুপারিশ আইনগতভাবে বলবৎ হিসেবে গণ্য হবে এবং এর বৈধতা নিয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না।
গণঅভ্যুত্থানের স্বীকৃতি: ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
শহীদ ও আহতদের সহায়তা: গণঅভ্যুত্থানকালে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হবে, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া হবে এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।
সনদে বলা হয়েছে, যে সকল প্রস্তাব অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য সেগুলোর বাস্তবায়ন পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই নিশ্চিত করা হবে।
Comments