যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কৃষি খাতকে দখলে নিতে চায়: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কৃষি খাতকে নিজেদের দখলে নিতে চাইছে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র জিএমও (জেনেটিক্যালি মোডিফায়েড অর্গানিজম) পণ্য আনবেই এবং তাদের বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের কৃষি খাতে প্রবেশ করবে।
বুধবার ঢাকায় প্রেস ইনস্টিটিউটে 'বাংলাদেশের ভবিষ্যত নির্ধারণী উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণ ও দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি বিষয়ে সতর্ক পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন' শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
ফরিদা আখতার বলেন, "আমেরিকানদের সঙ্গে যত আলোচনা হয়েছে, তাতে দেখা গেছে যে তারা জিএমও আনার জন্য বাংলাদেশের কৃষি খাতকে দখলে নিতে চায়। আমার মন্ত্রণালয় যেহেতু কৃষি মন্ত্রণালয় নয়, আমি এ বিষয়ে কিছু করতে পারছি না।"
তিনি আরও বলেন, তার মন্ত্রণালয়ের কাছে এমন প্রস্তাব এসেছে যে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে মাংস আমদানি করলে তা ৩০০ টাকায় বিক্রি করা যাবে, যেখানে বর্তমানে গরুর মাংসের দাম ৭০০-৮০০ টাকা। তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অভিযোগের ভয় দেখিয়ে বাংলাদেশকে মাংস আমদানিতে বাধ্য করতে চাইছে। হালাল ইস্যু নিয়ে প্রশ্ন তুললে তারা বলেছে, ৩০ হাজার মাওলানা নিয়ে গিয়ে হালাল পদ্ধতিতে জবাই করে মাংস পাঠানো হবে।
উপদেষ্টা বলেন, বিদেশ থেকে সস্তায় গরুর মাংস আমদানি করলে দেশীয় খামারি, বিশেষ করে গরিব নারীরা যারা গরু পালন করে জীবিকা নির্বাহ করেন, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তিনি জানান, আমদানি করা মাংসের মাধ্যমে জুনোটিক রোগ প্রবেশের ঝুঁকিও রয়েছে, তাই সরকার মাংস আমদানি কমানোর চেষ্টা করছে।
এই সভায় উপস্থিত অন্যান্য বক্তারাও বিভিন্ন বিষয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গোপন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তিগুলো প্রকাশ করে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারত, যা ভবিষ্যতে এই ধরনের চর্চা বন্ধ করত।
Comments