
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন বলেছেন, ‘দেখানোর জন্য বিচার করলে নতুন ধরনের অন্যায় ও অবিচার সৃষ্টি হয়। গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে, তবে তা সুষ্ঠু ও ন্যায্য হতে হবে। নইলে এই বিচার টিকবে না, এবং বিচারপ্রার্থীরাও সন্তুষ্ট হবেন না।’
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং ইনিশিয়েটিভ ইন পোস্ট কনফ্লিক্ট অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি এবং বাংলাদেশ ২.০ ইনিশিয়েটিভ এই সভার যৌথ আয়োজন করে।
সারা হোসেন বলেন, ‘গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের পাশাপাশি গণগ্রেপ্তার এবং একাধিক বা শতাধিক মামলার ঘটনাগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘনের আওতায় আনার বিষয়টি ভাবতে হবে। এসব ঘটনা এখনো চলছে, কিন্তু বিচার বিভাগ এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের আর্থিক সহায়তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের অবস্থা একরকম নয়। কারও দুই চোখ হারিয়েছে, কারও অন্য অঙ্গহানি ঘটেছে। তাই সহায়তা প্রদানে প্রত্যেকের অবস্থা পৃথকভাবে বিবেচনা করা প্রয়োজন।’
আলোচনায় আলোকচিত্রী শহিদুল আলম বলেন, ‘পতিত সরকারের আমলে গুম-খুনের ভুক্তভোগীদের কান্না দেখার কেউ নেই। এমনকি অনেকের সহানুভূতিও নেই। আমরা বারবার সেমিনার করে যাচ্ছি, কিন্তু এটি কি নাটকে পরিণত হবে? ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়। দ্রুত বিচারের নামে নতুন অন্যায় যেন না হয়, সেটিও খেয়াল রাখতে হবে।’
সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান, অন্তর্বর্তী সরকারের সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য মুস্তাইন জহির, প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর, মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ জিয়ানুল কবির, ব্রিগেডিয়ার (অব.) হাসান নাসির, কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত সাইফ আরেফিন প্রমুখ।
Comments