
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। সোমবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে ‘কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন-পরবর্তী এক বছর: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় রাজনৈতিক দল বা ‘কিংস পার্টি’ গঠন করা হয়েছে। এই কিংস পার্টি কারা—এমন প্রশ্নের জবাবে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “এটা গোপন করার কিছু নেই। এটি জাতীয় নাগরিক পার্টি। এর সঙ্গে সহযোদ্ধা হিসেবে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে দুজন এখন সরকারে রয়েছেন। সে হিসেবে এটি কিংস পার্টি।”
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক যাত্রা অশুভ ছিল। “ওই দিন বিকেল থেকেই বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের একাংশ দলবাজি, চাঁদাবাজি ও মামলা-বাণিজ্য শুরু করে, যা গত এক বছরে আরও বেড়েছে। এমনকি দলের উচ্চপর্যায় থেকে ব্যবস্থা নিয়েও এটি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। নতুন রাজনৈতিক দলগুলোও জন্মলগ্ন থেকে একই পথ অনুসরণ করে আত্মঘাতী পথে অগ্রসর হয়েছে।”
টিআইবির গবেষণা অনুযায়ী, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত ১১ মাসে ৪৭১টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় ১২১ জন নিহত এবং ৫,১৮৯ জন আহত হয়েছেন। এসব সহিংসতার ৯২ শতাংশের সঙ্গে বিএনপি, ২২ শতাংশের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, ৫ শতাংশের সঙ্গে জামায়াত এবং ১ শতাংশের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টি জড়িত ছিল।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে থাকা ঢাকার ৫৩টি পরিবহন টার্মিনাল ও স্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন ২ কোটি ২১ লাখ টাকা চাঁদাবাজি হয়েছে। এ ছাড়া সিলেটের কোয়ারি ও নদ-নদী থেকে পাথর লুটপাট, সেতু, বাজার, ঘাট, বালুমহাল, জলমহালের ইজারা নিয়ন্ত্রণ এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনৈতিক মামলার ঘটনা ঘটেছে।
টিআইবির পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ‘মব’ তৈরি, সড়ক অবরোধ, থানা ঘেরাও ও বিক্ষোভের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো হয়েছে।
Comments