Image description

বাংলাদেশে বর্তমানে কোনো ধরনের জঙ্গিবাদের অস্তিত্ব নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তার এবং তিনজনকে ফেরত পাঠানো হলেও দেশে বর্তমানে জঙ্গিবাদের কোনো অস্তিত্ব নেই। দেশে অতীতে জঙ্গি তৎপরতা থাকলেও এখন সেসব নির্মূল করা হয়েছে।

রোববার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রপ্তানি কার্গো ভিলেজ ও বিএডিসি হিমাগার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি।

সেখানে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের জঙ্গিবাদের কোনো অবস্থান নেই। এখানে কোনো ধরনের জঙ্গিবাদ নেই। আপনাদের সহযোগিতায় জঙ্গিবাদ নির্মূল করে দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, বাংলাদেশে কোনো ‘জঙ্গি নেই’। আগে ‘জঙ্গিবাদের প্রলেপ দিয়ে নাটক সাজানো হত’ বলেও ভাষ্য তার।

ঢাকার পুলিশ কমিশনারের ওই বক্তব্য নিয়ে আলোচনা হলে পরে ডিএমপি পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছে, বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্য ‘খণ্ডিতভাবে’ উপস্থাপন করা হয়েছে।

এছাড়া ডিএমপি কমিশনারের এমন বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে পুলিশের আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, “দেশে টোটালি কোনো জঙ্গি নেই- এমন নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারে না।”

শাহজালালে সাংবাদিকদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “গত দশ মাসে কোনো একটি তথ্য দিতে পেরেছেন? আগে জঙ্গি ছিল আপনার তথ্য দিছেন, এখন নেই আপনার দিতে পারেন না।"

মালয়েশিয়ার ঘটনায় তদন্ত হচ্ছে

এর মধ্যে জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তারের খবর এসেছে। শুক্রবার ‘জঙ্গিবাদে জড়িত’ থাকার অভিযোগে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরত পাঠানো তিনজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারেও পাঠানো হয়েছে।

এই প্রসঙ্গ তুলে সাংবাদিকরা বলেন, “মালয়েশিয়া থেকে বেশ কিছু জঙ্গিকে ধরা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে কোনো জঙ্গি নেই কেউ কেউ এমন বলছেন।"

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এই প্রসঙ্গে বলেন, "এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এটা সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। যে তিনজনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে মূলত তাদের ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে।

“আর মালয়েশিয়ার পুলিশ প্রধান যে পাঁচ জনের ব্যাপারে বলেছেন আমাদের সরকারি লেভেলে যোগাযোগ করা হচ্ছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি।"

মালয়েশিয়ার পুলিশের মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ খালিদ ইসমাইল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে পরিচালিত ধারাবাহিক অভিযানে ওই ৩৬ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়; তারা মূলত কারখানা, নির্মাণ ও সেবা খাতে কর্মরত ছিলেন।তাদের মধ্যে পাঁচজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

গোয়েন্দা তথ্যের বরাতে মালয়েশিয়া পুলিশের আইজি খালিদ ইসমাইল বলছেন, বাংলাদেশিদের ওই চক্রটি অন্য বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে থেকে সদস্য বাড়াচ্ছিল এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে ‘উগ্রবাদী মতাদর্শ’ ছড়াচ্ছিল।

তিনি বলেন, এই চক্র আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার সার্ভিস ও ই-ওয়ালেট ব্যবহার করে সিরিয়া ও বাংলাদেশে ‘আইএসের জন্য’ অর্থ পাঠাত। মালয়েশিয়া পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের কাউন্টার টেরোরিজম ডিভিশন অর্থ সংগ্রহের প্রমাণ পেয়েছে।

মালয়েশিয়ার পুলিশ প্রধানের বক্তব্য এবং এবং আইএসের জন্য’ অর্থ যোগানের বিষয়ে প্রশ্নের জবাব স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “"বাংলাদেশ এদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সেখানকার পুলিশ প্রধান কী বলেছেন আমাদের জানা নেই। সরকারি লেভেলে আমাদের কোন মেসেজ নেই।"