
আজ আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় এ বছর দিবসটি পালন করা হচ্ছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী বিশ্বের সকল দেশের শান্তিরক্ষীদের অসামান্য অবদানকে এই দিনে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হবে। দিবসটি উদযাপনে রাষ্ট্রীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাণী দিয়েছেন। তিনি বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত সব শান্তিরক্ষীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। বিশেষভাবে স্মরণ করি কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী সব শান্তিরক্ষীকে। যাদের আত্মত্যাগ বিশ্বশান্তি রক্ষার অগ্রযাত্রাকে মহিমান্বিত করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় যুদ্ধপীড়িত ও সংঘাতময় অঞ্চলে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। ১৯৮৮ সালে সর্বপ্রথম শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ বর্তমানে সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। আমাদের শান্তিরক্ষীরা সংঘাতময় বিভিন্ন দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও জরুরি মানবিক সহায়তা প্রদানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের কর্মদক্ষতা ও নিষ্ঠা যুদ্ধপীড়িত সাধারণ জনগণের আস্থা অর্জন করেছে, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের মর্যাদাকে করেছে আরও সমুন্নত। ]
তিনি বলেন, গত জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ-অভ্যুত্থান এবং পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সশস্ত্র বাহিনী জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অভিজ্ঞ সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা সংঘাত প্রতিরোধ, বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা, মানবাধিকার নিশ্চিতকরণ ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করবেন বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, বাংলাদেশ শান্তির সংস্কৃতি, সহনশীলতা এবং মানবিকতার চর্চায় বিশ্বাসী। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আমাদের অব্যাহত অংশগ্রহণ বিশ্বে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতীক।
আইএসপিআর জানায়, সকালে শান্তিরক্ষীদের স্মরণের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) প্রধান অতিথি হিসাবে ‘শান্তিরক্ষী দৌড়/র্যালি-২০২৫’ উদ্বোধন করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আহত শান্তিরক্ষীদের জন্য সংবর্ধনা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ওপর বিশেষ উপস্থাপনার আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
পুলিশ সদরদফতর সূত্র জানায়, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের পদযাত্রা সূচিত হয় ১৯৮৯ সালে নামিবিয়া মিশনের মাধ্যমে। শুরু থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশের ২১ হাজার ৮১৫ শান্তিরক্ষী ২৪টি দেশে ২৬টি মিশনে পেশাদারিত্ব ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিশ্ব শান্তিরক্ষায় জীবন উৎসর্গ করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের ২৪ শান্তিরক্ষী। বর্তমানে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, সাউথ সুদান ও সেন্ট্রাল আফ্রিকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের ১২৮ পুরুষ ও ৭১ নারীসহ ১৯৯ শান্তিরক্ষী নিয়োজিত রয়েছেন।
Comments