Image description

বায়িং হাউসে চাকরি দেওয়ার নামে তরুণীদের আটকে রেখে পর্নো ভিডিও তৈরি করে আসছিল একটি চক্র। ভিডিও ধারণের আগে তাদের ইয়াবা সেবনে বাধ্য করা হতো। পরে আপত্তিকর ছবি-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে পরিবারের কাছ থেকে আদায় করা হতো মোটা অংকের টাকা। অন্তত দুই বছর ধরে অপরাধীচক্র রাজধানীর উত্তরায় বাসা ভাড়া নিয়ে এই অপকর্ম করে আসছিল। ভুক্তভোগীদের ভিডিও বিভিন্ন পর্নো সাইটে বিক্রি করা হয়ে থাকতে পারে বলে শঙ্কা পুলিশের।

উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, এক কলেজছাত্রী নিখোঁজের তদন্তে নেমে এই চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়। এরই মধ্যে চক্রের সদস্য মাসুম পারভেজ, সোলাইমান হোসেন, শফিকুল ইসলাম সৌরভ, মোছা. মায়া ও রুলি খানমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের তিনজনের মোবাইল ফোনে শতাধিক আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীর প্রকৃত সংখ্যা কত, তদন্তে বেরিয়ে আসবে। চক্রের পলাতক সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। সেই সঙ্গে গ্রেপ্তারদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ।

উত্তরা পশ্চিম থানা সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ মে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসা থেকে বের হয়। এর পর তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে ২৭ মে রাত ২টা ৩৬ মিনিটে ছাত্রীর মায়ের মোবাইলে ফোনে কল করে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। ঘটনাটি তারা উত্তরা পশ্চিম থানাকে জানান। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চক্রটি শনাক্ত করা সম্ভব হয়।

এক পর্যায়ে ২৮ মে বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের ১০/বি সড়কে ৩৭ নম্বর বাসার দোতলা থেকে অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অভিযানে বিভিন্ন সময় মুক্তিপণ বাবদ আদায় করা ১ কোটি ৪১ লাখ টাকা, ৬০ পিস ইয়াবা, দুটি সিসি ক্যামেরা এবং তিনটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। তবে তাদের সহযোগী কয়েকজন দৌড়ে পালিয়ে যায়। গ্রেপ্তার ও পলাতকদের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে তিনটি মামলা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, মধুমিতা নামে ভুক্তভোগী তরুণীর এক বান্ধবী এ চক্রের সঙ্গে জড়িত। সে তরুণীকে ভালো বেতনে চাকরি দেওয়ার কথা বলে উত্তরার ওই বাসায় নিয়ে যায়। প্রথম দফায় তার লোক দেখানো ইন্টারভিউ নিয়ে ছবি তুলে রাখা হয়। তাকে বলা হয়, বিদেশি ক্রেতারা মাঝেমধ্যেই এখানে আসে। তাদের সঙ্গে থাকতে হবে, কথা বলতে হবে ইত্যাদি। এর পর ২৬ মে তাকে আবারও ডেকে নেওয়া হয়। সেদিন তাকে আটকে রেখে পরে আপত্তিকর ছবি-ভিডিও ধারণ করা হয়।