Image description

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরবেন না আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মঙ্গলবার দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম।

নুরুল ইসলাম বলেন, অধ্যাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের ঘরে ফেরার সুযোগ নেই। আন্দোলন চলবে। প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। 

তিনি জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় কর্মসূচি দেওয়া আছে। মঙ্গলবার যদি বিষয়টি সুরাহা না হয় তবে আগামীকালও কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। 

নুরুল ইসলাম বলেন, আমরা শুনতে পেয়েছি সঙ্কট নিরসনে সাত সদস্যের সচিব কমিটি গঠন করা হয়েছে। ভূমি সচিবকে প্রধান করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে আজ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা জেনেছি প্রধান উপদেষ্টা দেশের বাইরে যাচ্ছেন। তিনি দেশে বিদেশ যাওয়ার আগে যেন এই সঙ্কটের নিরসন করে যান। নতুবা ১৮ লাখ কর্মকর্তা কর্মচারী আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন। 

নুরুল ইসলাম জানান, আজ সকাল সাড়ে ১০টায় বিক্ষোভ করেছি। মিডিয়া প্রবেশ করতে না দেওয়ায় ক্ষোভ জানাচ্ছি। কর্মসূচিতে সব পর্যায়ের কর্মচারীরা নেমে এসেছে। সারা দেশে আন্দোলন হয়েছে। আপনারা (কর্মচারীরা) সারা দেশে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

তিনি জানান, অধ্যাদেশ থাকলে অপপ্রয়োগ করা হবে। অনেক মন্ত্রণালয়ে কঠোরভাবে বলা হয়েছে যে তোমরা বাইরে যেতে পারবে না।

এদিকে নিরাপত্তাবলয় ভেঙে চতুর্থদিনের মতো সচিবালয়ে বিক্ষোভ করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সচিবালয়ের ছয় নম্বর ভবনের পাশে বাদামতলায় জড়ো হয়ে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন।

বিক্ষোভের সময় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘অবৈধ কালো আইন, বাতিল কর করতে হবে’, ‘কর্মচারী মানে না, অবৈধ কালে আইন’, ‘মানি না মানবো না, অবৈধ কাল আইন’, ‘এক হও লড়াই কর, ১৮ লাখ কর্মচারী’, ‘সচিবালয়ের কর্মচারী, এক হও এক হও’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’- এ ধরনের বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।

এদিকে সচিবালয়ে কর্মচারীদের আন্দোলন কর্মসূচির মধ্যে আজ সচিবালয়ে দর্শনার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সচিবালয়ের গেটগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীদের সচিবালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অধ্যাদেশকে ‘নিবর্তনমূলক ও কালাকানুন’ আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান কর্মচারীরা। তা না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তারা।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়ারা বলেন, কালাকানুন যুক্ত করে প্রণীত অধ্যাদেশ কেউ মানবে না। ১৯৭৯ সালের সরকারি চাকরির বিশেষ বিধান ইতোমধ্যে দেশের সর্বোচ্চ আদালত বাতিল করেছেন। এই বাতিল বিধান পুনরুজ্জীবিত করার মানে নতুনভাবে বিতর্ক তৈরি করা। বর্তমান সরকার সেই কাজটিই করেছে। এর ফলে কর্মচারীদের অধিকার খর্ব হবে, তারা কর্মকর্তাদের রোষানলে পড়বে। কাজেই এই অধ্যাদেশ বাতিল করতে হবে। অন্যথায় যে কোনো মূল্যে এটা প্রতিহত করা হবে। প্রয়োজনে তারা আইন মন্ত্রণালয়ের সব রুমে তালা দেবেন বলে ঘোষণা করেন।