
তেল বিক্রির কমিশন ন্যূনতম ৭ শতাংশ করাসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরী মালিক ঐক্য পরিষদ। এসময় তারা দাবি আদায়ে ১২ দিনের আল্টিমেটাম দেন। রবিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এই ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন সংগঠনটির যুগ্ম-আহ্বায়ক সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল।
বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরী মালিক ঐক্য পরিষদের অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে—
১। সওজ অধিদফতরের ইজারা ভূমির ইজারা মাশুল আগের মতো বহাল রাখতে হবে।
২। নবায়নকালীন সময়ে নির্ধারিত ইজারা মাশুলের পে-অর্ডারসহ আবেদন নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতরে জমা দিলে, সেটিকে ইজারা নবায়ন হিসেবে গণ্য করতে হবে।
৩। বিএসটিআই পূর্বের ন্যায় শুধু ডিসপেন্সিং ইউনিট স্ট্যাম্পিং ও পরিমাপ যাচাই কার্যক্রম পরিচালনা করবে এবং ফিসও পূর্বের নিয়মে নির্ধারিত হবে।
৪। আন্ডার গ্রাউন্ড ট্যাংক ক্যালিব্রেশন, ডিপ রড পরীক্ষণ ফিস ও নিবন্ধন প্রথা বাতিল করতে হবে।
৫। পেট্রোল পাম্প শিল্প নয়, বরং কমিশন এজেন্ট ভিত্তিক ব্যবসা হওয়ায় পরিবেশ, বিআরসি কলকারখানা ও ফায়ার সার্ভিস অধিদফতরের লাইসেন্স বা নিবন্ধন বাধ্যবাধকতা বাতিল করতে হবে।
৬। দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘর বা খোলা জায়গায় অবৈধভাবে মেশিন স্থাপন করে জ্বালানী তেল বিক্রি বন্ধ ও ডিলারশিপ ছাড়া বিপণন কোম্পানির সরাসরি তেল বিক্রি বন্ধ করতে হবে।
৭। ট্যাংক লরী চালক সংকট মোকাবিলায় চালকদের লাইসেন্স নবায়ন ও নতুন লাইসেন্স ইস্যু প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে।
৮। গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষার নামে রাস্তায় ট্যাংকলরী যত্রতত্র থামানো যাবে না।
৯। তেলের ডিপো গেটে কাগজপত্র পরীক্ষার সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে।
১০। সকল ট্যাংকলরীর জন্য আন্তঃজেলা রুট পারমিট ইস্যু করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল জানান, ২০২৫ সালে একাধিকবার জ্বালানি খাতের নানা সমস্যা ও দাবির বিষয়ে সরকারকে অবহিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে একাধিক বৈঠক এবং কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সর্বশেষ গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিপিসি চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে এক বৈঠকে তিনি ২৭ এপ্রিলের মধ্যে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে ব্যবসায়ীরা ঘোষিত কর্মসূচি স্থগিত করেন। তবে শনিবার পর্যন্ত প্রতিশ্রুতির কোনও বাস্তবায়ন না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা চরম হতাশায় পড়েছেন।
তিনি জানান, এমন অবস্থায় তারা জ্বালানি তেলের ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। তবে শেষ সুযোগ হিসেবে আগামী ২৪ মে পর্যন্ত সময় দিয়ে সরকারকে সব দাবি পূরণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। দাবি মানা না হলে ২৫ মে ভোর ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত প্রতীকী কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে, যার আওতায় সারা দেশে সব পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরী চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে হজ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের তেল সরবরাহ চালু থাকবে। জনসাধারণকে আগেভাগে প্রয়োজনীয় তেল সংগ্রহের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরী মালিক ঐক্য পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক মিজানুর রহমান রতন, জুবায়ের আহাম্মেদ চৌধুরীসহ সব বিভাগীয় তেল ব্যবসায়ী নেতার উপস্থিত ছিলেন।
Comments