Image description

২০১৩ সালে শাপলা চত্বরের হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে দুই দিনের সহিংসতায় নিরাপত্তা বাহিনীর সাত সদস্যসহ কমপক্ষে ৫৮ জন নিহত হয়েছিলেন বলে দাবি করেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। শনিবার(৩ মে) বেলা ১১টা ২৩ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে করা এক পোস্টে তিনি এই তথ্য জানান।

পোস্টে তিনি লেখেন, “যতবার আমি হেফাজতে ইসলামকে কোনো বড় ধরনের বিক্ষোভ মিছিল করতে দেখি, ততবার আমার হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জন্য শাপলা চত্বরের গণহত্যা নিয়ে করা তদন্তের কথা মনে পড়ে। যখন সারা বিশ্ব সেই গণহত্যার মৃতের সংখ্যা নিয়ে ধোঁয়াশায় ছিল, তখন আমি ঢাকাতে বিবিসির প্রাক্তন সংবাদদাতা মার্ক ডামেটের সঙ্গে সেই কঠিন কাজটি হাতে নিয়েছিলাম। আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলাম যে দুই দিনের সহিংসতায় নিরাপত্তা বাহিনীর সাত সদস্যসহ কমপক্ষে ৫৮ জন নিহত হয়েছিল।”

উপ-প্রেস সচিব  আরও উল্লেখ করেন, “দুই সপ্তাহ ধরে চলা তদন্তের সময়, রাস্তাঘাট চষে বেড়ানো, হাসপাতালের নথিপত্র ঘেঁটে দেখা, নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করা, প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলা এবং দাফনের প্রমাণ সংগ্রহ করা, মানুষকে মুখ খুলতে রাজি করানোর চেষ্টা করার সময়, আমি প্রতিনিয়ত নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ভয়ে ভীত ছিলাম।”

নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে এতদিন এই কাজের কৃতিত্ব দাবি করতে না পারার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “নিরাপত্তার কারণে, আমি আগে কখনও আমার কাজের কৃতিত্ব দাবি করতে পারতাম না, কিন্তু যখনই আমি দেখি যে কোনও সহকর্মী সাংবাদিক আমার কাজকে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করছেন, তখন তা আমাকে সত্যিই আনন্দ দেয়।”

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকা শহরের মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ১৩ দফা দাবিতে একটি সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশস্থলে ব্যাপক সংখ্যক লোক সমাগম হয় এবং রাতে সেখানে অবস্থান নেয়। পরদিন ৬ মে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালায়, যা ব্যাপক সহিংসতা ও হতাহতের ঘটনা ঘটায়। ওই ঘটনার পর বিভিন্ন মহল থেকে হতাহতের সংখ্যা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন দাবি করা হয়েছে। তবে এই প্রথম সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সরাসরি হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করলেন।