Image description

সম্প্রতি দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকাকে কেন্দ্র করে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এবং সামগ্রিকভাবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। এ ছাড়া ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বা টিআইবির সর্বশেষ প্রতিবেদনে গণমাধ্যম ও তথ্য প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে যে চিত্র ফুটে উঠেছে, তা দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেছে সংগঠনটি।

আজ বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) নোয়াবের সভাপতি এ কে আজাদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ কথা হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার যে প্রত্যাশা নিয়ে দেশবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, সেখানে তথ্যপ্রকাশ, মতপ্রকাশ এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মতো মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত হবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেছিলাম। দুর্ভাগ্যজনকভাবে গত এক বছরে সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।’

নোয়াবের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা আশঙ্কাজনকভাবে দেখলাম, সম্প্রতি দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় “মব” তৈরি করে উদ্যোক্তাদের উচ্ছেদ ও দাবি আদায়ের চেষ্টা হয়েছে। কর্মীদের কোনো দেনা-পাওনার বিষয় থাকলে তা শ্রম আদালতের মাধ্যমে মীমাংসা হওয়ার কথা। সংবাদ বা কনটেন্ট-সংক্রান্ত কোনো বিরোধ মীমাংসায় বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগ করা যেত। কিন্তু তা না করে পত্রিকার কার্যালয়ে ও পোর্টালে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে।’

টিআইবির প্রতিবেদনে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন, হয়রানির যে চিত্র উঠে এসেছে, তা উল্লেখ করে নোয়াবের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত এক বছরে (আগস্ট ২০২৪ থেকে জুলাই ২০২৫) ৪৯৬ জন সাংবাদিক হয়রানির শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ২৬৬ জনকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানসংক্রান্ত হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে। দায়িত্ব পালনকালে তিনজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। কমপক্ষে ২৪ জন গণমাধ্যমকর্মীকে পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে, ৮টি সংবাদপত্রের সম্পাদক এবং ১১টি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের বার্তাপ্রধানকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

উপরিউক্ত পরিস্থিতি বিবেচনায় নোয়াবের পক্ষ থেকে একটি অবাধ ও গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সরকারের জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে নোয়াব। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কোনো সংবাদপত্র কিংবা গণমাধ্যমে ‘মব’ সৃষ্টি করে মালিকপক্ষকে হুমকি, ভয়ভীতি দেওয়ার সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে।

নোয়াব বলেছে, ‘আমরা বিশ্বাস করি, গণমাধ্যমের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সম্ভব হলে তা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভিতকে আরও মজবুত করবে।’