Image description

একজন মানুষের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে লক্ষ্য থাকা। ভবিষ্যতে কী করবেন, নিজেকে কোথায় দেখতে চান, তা নির্দিষ্ট করে থাকা উচিত।  স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিজের চেষ্টাও থাকতে হবে। আশপাশে থাকা বিত্তবান কিংবা অর্থ-সম্পদধারী ব্যক্তিদের স্থানে নিজেকে দেখতে চাইলে নিজেরও লক্ষ্য থাকতে হবে।

জীবন পরিচালনায় কিছু খারাপ আর্থিক অভ্যাস রয়েছে, যা আমাদের দীর্ঘদিন দরিদ্র করে রাখে। কথাটি শুনতে খারাপ লাগলেও সত্য, আপনার জীবন পরিচালনার উপরই নির্ভর করছে লক্ষ্যে পৌঁছাতে আপনি কতটা সক্ষম। দরিদ্র না হলেও খারাপ অভ্যাসগুলো আপনাকে মধ্যবিত্ত শ্রেণি থেকে বেরিয়ে আসতে দেয় না। যেসব অভ্যাস আমাদের আর্থিকভাবে সফল হতে দেয় না, সেসব নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। তাহলে এ বিষয়ে জেনে নেয়া যাক।

আর্থিক লক্ষ্য না থাকা: জীবনে যদি সঞ্চয় বা বিনিয়োগের কোনো লক্ষ্য না থাকে, তখন এতটুকু নিশ্চিত থাকে যে, ভবিষ্যতের জন্য আপনার হাত বা পকেট শূন্য। স্বাস্থ্য বা সম্পদ, যেকোনো ক্ষেত্রেই লক্ষ্য থাকা উচিত। সঞ্চয় না করলে ভবিষ্যতে ঋণের বোঝা বহন করতে হবে। ফলে স্বাভাবিকভাবে পিছিয়ে পড়তে হবে।

নিজেকে শেষ দিকে না রাখা: আপনি যখন মাসিক অর্থ উপার্জন করেন, তখন স্বাভাবিকভাবেই প্রথমে নিজের বা পরিবারের চাহিদা ও বিলাসিতা পূরণে অর্থ ব্যয় করেন। এ ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় খুব একটা থাকে না। থাকলেও সেটা খুবই অল্প থাকে কিংবা কখনো সঞ্চয় করা হয় না। বিপরীতে ধনীরা প্রথমে ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ করেন।

ঋণ নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করা: হঠাৎ খরচ মেটাতে বা প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের জন্য অনেক সময় ঋণ নেয়ার প্রয়োজন হয়। ঋণ নিয়ে যখন যাবতীয় সব কাজ করা হয়, তখন অনেকেরই এই ঋণ নিয়ে চিন্তা থাকে না। কারণ, এটি বিভিন্ন অঙ্কে দীর্ঘমেয়াদে পরিশোধ করতে পারেন। অথচ এই ঋণ আপনার থেকে লভ্যাংশসহ টাকা আদায় করে নেয়। যা আপনার নিজের সঞ্চয় থেকে কমতে থাকে।

জরুরি তহবিল না থাকা: অনেক সময় জরুরি টাকার প্রয়োজন হয়। এ সময় অনেকেই শুধু ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়। এই ঋণ নেয়া যুক্তিসঙ্গত মনে হলেও তারা আপনার থেকে পরে ঠিকই অর্থ নিয়ে নেয়। এ ক্ষেত্রে আপনার জরুরি তহবিল থাকলে সেখান থেকে প্রয়োজনীয় খাতে টাকা ব্যয় করতে পারতেন।

আয় ও ব্যয় সম্পর্কে ধারণা না থাকা: আপনার আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। আপনার লক্ষ্য না থাকলে আপনার কোনো পথই থাকে না এবং কোনো হিসাব-নিকাশও থাকে না। এর অর্থ হচ্ছে―আপনার নিজের প্রতি কোনো জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতা নেই। ফলে প্রকৃত অর্থেই দরিদ্র থেকে যাওয়া হয় আপনার। বিপরীতে ধনী ব্যক্তিরা তাদের আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়, সবকিছু সম্পর্কে অবগত থাকে। এতে সঠিক পরিকল্পনা করে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে পারে।

বিলাসিতা: প্রায়ই বাইরে খাওয়া, ব্র্যান্ডের জিনিসপত্র কেনা, ব্যয়বহুল পরিবহন ব্যবহার কিংবা বিমানে ভ্রমণ এবং ছুটির দিনে বিনোদনের জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করা শুধুই বিলাসিতা। এতে প্রয়োজনের থেকে বেশি পরিমাণ অর্থ খরচ হয়।

মৌলিক ব্যাপারে ধারণা না থাকা: ব্যক্তিগত অর্থের মৌলিক ধারণা না থাকার কারণেও অনেক সময় পিছিয়ে পড়তে হয়। লক্ষ্য, বাজেট, পর্যবেক্ষণ, ভাড়া বনাম কেনা, বড় বাড়ি বা বিলাসবহুল গাড়ি কেনার মতো অভ্যাস আপনাকে আর্থিকভাবে পঙ্গু করে দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে ভালো করে বুঝে তবে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।