Image description

গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের মিছিলে ‘স্লোগান দিয়ে’ গ্রেপ্তার হওয়া বাকপ্রতিবন্ধী সাইদ শেখকে জামিন দিয়েছেন আদালত। ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জাকির হোসাইন এই আদেশ দেন। তার আইনজীবী মোহাম্মদ লিটন মিয়া আশা করছেন, বুধবার এই তরুণ কারামুক্ত হবেন।

গত ২৪ আগস্ট গুলিস্তানের গোলাপশাহ মাজারের পাশে আওয়ামী লীগের মিছিলে ‘স্লোগান দেওয়ার’ অভিযোগে সাইদ শেখসহ আরও দুজনকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার এসআই মাকসুদুল হাসান সাইদকে বাকপ্রতিবন্ধী হিসেবে উল্লেখ করে আদালতে হাজির করেন এবং তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।

তবে ২৭ আগস্ট তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে নতুন আবেদন করে বলেন যে, সাইদ আসলে বাকপ্রতিবন্ধী নন, বরং তোতলা বা অস্পষ্টভাষী। তিনি আরও বলেন, এই বিষয়ে কোনো দালিলিক প্রমাণও পাওয়া যায়নি।

সোমবারের শুনানিতে প্রসিকিউটর মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন জামিনের বিরোধিতা করে সাইদকে তোতলা বলে দাবি করেন এবং বলেন যে, "প্রতিবন্ধী আর তোতলা এক না"। তিনি আরও বলেন, সাইদকে আওয়ামী লীগের লোকজন টাকা দিয়ে মিছিলে নিয়ে এসেছে।

তবে সাইদের আইনজীবী উম্মে হাবিবা আদালতকে বলেন, "সাইদ একজন বাকপ্রতিবন্ধী, কথা বলতে পারে না। বাকপ্রতিবন্ধী মিছিলে স্লোগান দিবে কীভাবে?" তিনি বলেন, সাইদ নিজে ভাতও খেতে পারে না এবং তার ন্যায়বিচার প্রয়োজন।

উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত বলেন, তিনি মানবিক দিক বিবেচনা করে সাইদের জামিন মঞ্জুর করছেন। তিনি আরও জানান, এই মামলার শুনানি তিনবার তার কাছে এলেও তিনি কখনও মানবিক কারণে জামিন আবেদন বাতিল করেননি। তিনি বলেন, পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল না হওয়া পর্যন্ত সাইদের জামিন মঞ্জুর করা হলো।

সাইদের মা সুমি জানিয়েছেন, তার ছেলে নিজে হাত দিয়ে ভাত খেতে পারে না এবং স্বাভাবিক কাজ করতে পারে না। তিনি বলেন, “ও মাঝেমধ্যে কাউকে কিছু না বলে এখানে-ওখানে চলে যায়; খুঁজে পাওয়া যায় না। নারায়ণগঞ্জ থেকে কীভাবে ঢাকায় গেল আমরা জানি না।” সাইদের মামা সুমন বলেন, “ও প্রতিবন্ধী, রাজনীতি বোঝে না। যে নিজের কাজটা নিজে করতে পারে না, সে কীভাবে রাজনীতি করবে?”