
রাজধানীর গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ৯ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ মঙ্গলবার। এ সময়ে মামলার বিচার দুই ধাপ পার হয়েছে। চূড়ান্ত রায় পেতে এখনও আরেক ধাপ বাকি।
এরই মধ্যে ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট রায়ে সাত জঙ্গির মৃত্যুদণ্ডাদেশ কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন। ২২৯ পৃষ্ঠার ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি এক বছর আট মাস পর গত ১৮ জুন প্রকাশিত হয়েছে। ফলে মৃত্যুদণ্ড থেকে কমিয়ে আমৃত্যু দেওয়া সাজার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করবে কিনা, তা জানা যায়নি। অন্যদিকে আসামিপক্ষ বলছে, রায়ের কপি পেলে সাজা কমাতে তারা সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করবে। আপিল বিভাগ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে।
কারাগারে থাকা আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হচ্ছে- জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশ, আব্দুস সবুর খান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাদিসুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশিদ রিপন।
হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়েছে, বিচারিক আদালত যে ধারায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন, সেই ধারায় আসামিদের অপরাধ সংঘটিত হয়নি। এই আসামিরা সরাসরি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত থাকলে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যায় না। তাই তাদের মৃত্যুদণ্ড থেকে কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হলো।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, হোলি আর্টিজানে দেশি-বিদেশি ২০ জন নাগরিকসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে যে নিষ্ঠুর ও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, ওই হামলায় বহির্বিশ্বের কাছে দেশের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছিল। এ ছাড়া এমন নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড জনসাধারণের মনে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে এবং জননিরাপত্তা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত করেছে বলেও মন্তব্য করেন আদালত।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ নৃশংস হামলা চালায় নব্য জেএমবির আত্মঘাতী সদস্যরা। তারা অস্ত্রের মুখে দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে এবং কুপিয়ে ও গুলি করে ২২ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। তাদের গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। পরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হয় পাঁচ জঙ্গি। এ হত্যাকাণ্ডটি সারাবিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
Comments