
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ঢাকায় পৌঁছেছেন। শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুর ২টার কিছু পরপরই বিশেষ ফ্লাইটে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম। এর আগে সকালে দুদিনের সফরে বিশেষ ফ্লাইটে তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। প্রায় ১৩ বছর পর কোনও পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর এটি।
পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ সফর পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
সফরের প্রথম দিনেই ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনের পক্ষ থেকে একটি রিসিপশনের আয়োজন করা হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানের ফাঁকে বাংলাদেশের শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ ও নাগরিক সমাজের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করবেন ইসহাক দার।
সফরের দ্বিতীয় দিন রবিবার তার মূল বৈঠক হবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে। শুরুতে একান্ত বৈঠক এবং পরে প্রতিনিধি পর্যায়ে আলোচনা হবে। বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে পাঁচ থেকে ছয়টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আলোচনায় ব্যবসা, বিনিয়োগ, সংযুক্তি, মানুষের চলাচল সহজ করা ছাড়াও দ্বিপক্ষীয় নানা বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে। বাংলাদেশ পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, বোঝাপড়া ও অভিন্ন স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চায়। তবে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সুরাহা ছাড়া অগ্রগতি টেকসই হবে না বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।
ওইদিন বিকালে ইসহাক দার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। সফরকালে তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসায় গিয়ে দেখা করবেন। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করার কথা রয়েছে তার।
এর আগে গত এপ্রিলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ ঢাকা সফর করেন, যা দুই দেশের সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্কে নতুন গতি সঞ্চারিত হয়েছে।
ইসহাক দার এপ্রিলে ঢাকা সফরের পরিকল্পনা করলেও কাশ্মীরে উত্তেজনার কারণে তা স্থগিত হয়। এবারের সফরে ব্যবসা, বিনিয়োগ, সংযুক্তি ও জনগণের চলাচল সুগম করার বিষয়ে আলোচনা হবে। তবে অমীমাংসিত ঐতিহাসিক বিষয়গুলোর সমাধান ছাড়া সম্পর্কের গভীরতা কার্যকর হবে না বলে মনে করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
২০১২ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার ডি-৮ সম্মেলনের জন্য ঢাকা সফর করেছিলেন। এটিই ছিল সর্বশেষ পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর।
Comments