Image description

বিদেশি নির্বাচন প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র তার দীর্ঘদিনের পররাষ্ট্রনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বিশ্বজুড়ে মার্কিন দূতাবাসগুলোতে একটি কঠোর তারবার্তা পাঠিয়েছেন, যেখানে ভিনদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করা থেকে কূটনীতিকদের বিরত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের হাতে আসা একটি অভ্যন্তরীণ নোট থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

গত ১৭ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে পাঠানো এই তারবার্তায় বলা হয়েছে, এখন থেকে পররাষ্ট্র দপ্তর নির্বাচন-সংক্রান্ত কোনো বিবৃতি বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেবে না, যদি না এতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির ‘সুস্পষ্ট ও জরুরি’ স্বার্থ জড়িত থাকে।

বার্তায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, "যখন কোনো দেশের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করা যথাযথ বলে বিবেচিত হবে, তখন আমাদের বক্তব্য হবে সংক্ষিপ্ত। বিজয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানানো ও প্রয়োজনে অভিন্ন পররাষ্ট্রনীতির স্বার্থের উল্লেখ করার মধ্যে তা সীমাবদ্ধ থাকবে।" 

বিশেষভাবে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, "বিদেশের কোনো নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা, গ্রহণযোগ্যতা কিংবা সংশ্লিষ্ট দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে হবে।"

এই নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে যে, নির্বাচন-সংক্রান্ত যেকোনো মন্তব্য শুধু পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে অথবা দপ্তরের মুখপাত্র করবেন। কোনো মার্কিন কূটনীতিক শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমতি ছাড়া এমন বিবৃতি দিতে পারবেন না।

এই নতুন নির্দেশনা ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সময় শুরু হওয়া একটি নীতির ধারাবাহিকতাকে নির্দেশ করে। ট্রাম্প তার শাসনামলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে 'পশ্চিমা হস্তক্ষেপ' বন্ধ করার উপর জোর দিয়েছিলেন এবং অংশীদারিত্ব গড়ার কথা বলেছিলেন। এই নীতি গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রসারের ঐতিহ্যবাহী মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দেয়, যা অনেক সময় সমালোচিত হয়েছে মিত্রদেশগুলোর প্রতি দ্বিমুখী আচরণের জন্য। ট্রাম্প প্রশাসন পররাষ্ট্র বিভাগের মানবাধিকার শাখা পুনর্গঠনেরও উদ্যোগ নিয়েছিল, যা এই নীতি পরিবর্তনের একটি অংশ।