
পেরুতে একটি সোনার খনি থেকে অপহৃত ১৩ জন খনি শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কয়েক দিন আগে তাঁদের অপহরণ করা হয়েছিল।নিহত শ্রমিকরা দেশটির পাটাজ প্রদেশে অবস্থিত ‘পোডেরোসা’ নামের একটি খনি কোম্পানিতে কাজ করতেন। রোববার খনি কোম্পানি পোদেরোসা এ তথ্য জানায়। খবর বিবিসির।
পুলিশ উদ্ধারকারী দল প্রবল অনুসন্ধান চালানোর পর শ্রমিকদের মৃতদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। অবৈধ খনি শ্রমিকরা অপরাধীদের সঙ্গে যোগসাজশে শ্রমিকদের অপহরণ করে বলে ধারণা পুলিশের।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র শ্রমিকদের অপহরণ করে খনি দখলের চেষ্টা চালায়। অপরাধীরা তাদের খনির একটি সুড়ঙ্গের ভেতরে আটকে রাখে এবং প্রায় এক সপ্তাহ ধরে শ্রমিকদের পরিবারকে হুমকি দিতে থাকে।
গত কয়েক বছরে পেরুতে খনির ওপর অপরাধী গোষ্ঠীর হামলা বেড়েই চলেছে। ৮ হাজার কর্মীসংবলিত পোডেরোসা কোম্পানি শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানায়, অবৈধ খনি বন্ধে পুলিশের গাফিলতিতে তারা হতাশ।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই অঞ্চলে সহিংসতার মাত্রা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।’
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে—যেটি সম্ভবত অপহরণকারীরাই ধারণ করেছে। সেখানে দেখা যায়, শ্রমিকদের কাছ থেকে কাছেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তবে কেন তাদের হত্যা করা হয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
২০২০ সাল থেকে পোডেরোসা কম্পানির বেশ কয়েকটি খনি দখলে নিয়েছে অবৈধ চক্র, ফলে প্রতিষ্ঠানটি কিছু কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। এতে কর্মীদের জীবন যেমন ঝুঁকির মুখে পড়েছে, তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্থানীয় খনিশিল্পও।
গত মার্চে পাটাজ জেলার লা সিয়েনাগা উপত্যকার কাছে অপরাধীরা একটি খনি প্রকল্পে হামলা চালিয়ে দুইজনকে হত্যা করে। একই মাসে তারা একটি বিদ্যুৎ টাওয়ার উড়িয়ে দেয়, যেখান থেকে খনিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। এরপর তারা একাধিক খনি স্থাপনা দখলের চেষ্টাও করে।
কম্পানির দাবি, পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে তারা সরকারের কাছে আবারও নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানায়। উল্লেখ্য, পেরু বিশ্বের অন্যতম সোনার উৎপাদক দেশ। বছরে ১০০ টনের বেশি সোনা উত্তোলন করে দেশটি, যা বিশ্ব বাজারের প্রায় ৪ শতাংশ।
সূত্র : বিবিসি
Comments