Image description

বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সরকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে কোনো ঋণ পায়নি। পুরো অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি ছিল ঋণাত্মক ৬ হাজার ৬৩ কোটি টাকা, যার অর্থ হলো নতুন করে কেনার চেয়ে পুরোনো সঞ্চয়পত্র ভাঙানোর পরিমাণ বেশি ছিল। এটি টানা তিন অর্থবছর ধরে ঋণাত্মক নিট বিনিয়োগের ঘটনা। এই পরিস্থিতিতে সরকারকে ঋণের জন্য ব্যাংক খাতের ওপর বেশি নির্ভরশীল হতে হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং ব্যাংক ও বিল-বন্ডের সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় মানুষ সঞ্চয়পত্র থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম জানান, মানুষের গড় আয় কমে যাওয়ায় ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীরা এখন আর আগের মতো সঞ্চয় করতে পারছেন না।

গত অর্থবছরের মূল বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ছিল, যা পরে কমিয়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা করা হয়। কিন্তু বছর শেষে নিট বিক্রি ঋণাত্মক হয়। এর আগের দুই অর্থবছর, অর্থাৎ ২০২৩-২৪ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরেও সঞ্চয়পত্রের নিট বিনিয়োগ যথাক্রমে প্রায় ২১ হাজার ১২৪ কোটি টাকা এবং ৩ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা ঋণাত্মক ছিল।

তবে, সরকার আশা করছে যে চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ বাড়বে। এ জন্য কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে: ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনার জন্য আয়কর রিটার্নের প্রমাণপত্র দাখিলের শর্ত শিথিল করা হয়েছে, যা আগে ৫ লাখ টাকা ছিল। গত জানুয়ারি থেকে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রে একটি সীমা পর্যন্ত সুদের হার বাড়ানো হয়েছে। পেনশন সঞ্চয়পত্রে তিন মাসের পরিবর্তে প্রতি মাসে মুনাফা দেওয়ার সিদ্ধান্তও হয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে নিট ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।