Image description

চট্টগ্রাম কমার্স কলেজে ছাত্রশিবিরের 'হেল্প ডেস্ক'-এর ওপর ছাত্রদলের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা খান তালাত মাহমুদ রাফি। একইসঙ্গে তিনি শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রদলের সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনাবলি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। শনিবার (৩১ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।

রাফি তার পোস্টে উল্লেখ করেন, "চট্টগ্রাম কমার্স কলেজে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের সহযোগিতার জন্য শিবির 'হেল্প ডেস্ক' দিয়েছিল, সেখানে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা শিবিরের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। ছাত্রদলের শিবিরের ওপর এই হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি।"

তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাসগুলোতে রাজনৈতিক সহাবস্থান এবং সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে সকল ছাত্র সংগঠনকে দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানান।

আরেকটি পোস্টে রাফি ছাত্রদলের সাম্প্রতিক আরও কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করেন। তিনি জানান, গতকাল ফরিদপুরের নগরকান্দায় ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় বৈশাখী নামের এক ছাত্রীকে রাস্তায় ফেলে মারধর করেছে সেখানকার স্থানীয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এছাড়া, আদাবর থানায় এক নারীকে প্রকাশ্যে 'জিন্দেগি বরবাদ করে দেওয়ার' হুমকি দিয়েছেন বিএনপির এক নেতা। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) ছাত্রদলের কর্মসূচিতে অংশ না নেওয়ায় দুই ছাত্রীকে জোরপূর্বক হল ছাড়ার নির্দেশ ও হুমকি দিয়েছেন ছাত্রদল নেত্রী।

রাফি বলেন, "এই কয়েকটা ঘটনা সাম্প্রতিক ২-১ দিনের। তাছাড়াও সবাই কুয়েট, তিতুমীর কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজ, গ্রাফিক্স আর্ট কলেজ, কক্সবাজার পলিটেকনিক, ঢাকা পলিটেকনিক, শ্রীপুর কলেজ, তামিরুল মিল্লাত সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রদল কর্তৃক বিভিন্ন সহিংস কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবগত আছেন।"

এনসিপি নেতা খান তালাত মাহমুদ রাফি আরও বলেন, একটি ছাত্র সংগঠনের মূল উদ্দেশ্যই থাকে শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে কাজ করা। কিন্তু বর্তমান কর্মকাণ্ড হতাশাজনক। তিনি বলেন, "আমরা কোনো সহিংসতা চাই না, ক্যাম্পাসে কারো আধিপত্য চাই না, ক্যাম্পাসগুলোতে পুরোনো সংস্কৃতি চাই না, অস্ত্রের ঝনঝনানি চাই না। আমরা সহাবস্থানের ছাত্র রাজনীতি চাই।"

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, "৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে কেউ জোরপূর্বক কোনো প্রোগ্রামে নিয়ে যেতে পারবে না, একজন শিক্ষার্থী রাজনৈতিক কোনো প্রোগ্রামে যাবে কি না সেটা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এ ব্যাপারে কারো হস্তক্ষেপ বরদাশত করা হবে না।" 

তিনি সতর্ক করে বলেন, "কেউ মজলুম থেকে জালিম হইতে যাইয়েন না। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেন, জালিমের ধ্বংস অনিবার্য। যারা পুরোনো অপরাজনীতি চর্চা করার চেষ্টা করবে তাদের পরিণতি পূর্বের রাজনৈতিক দলের মতোই হবে।"

রাফি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, "কেউ যদি ক্যাম্পাসগুলোতে একক আধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টাও করেন আমরা বাঁধা হয়ে দাঁড়াব, প্রত্যেকটা শিক্ষার্থী বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে। আমরা সহাবস্থানের রাজনীতি চাই। এ ব্যাপারে ছাত্রদল, ছাত্রশিবিরসহ প্রত্যেকটা ছাত্র সংগঠনের সচেতন হতে হবে এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে ছাত্র রাজনীতি হতে হবে গঠনমূলক এবং শিক্ষার্থীবান্ধব।"