Image description

মা দুর্গার আগমনী ঘণ্টাধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা। বাংলার সবচেয়ে বড় হিন্দু ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে পুরো উপজেলাজুড়ে এখন উৎসবের আমেজ। প্রতিমা শিল্পীরা দিন-রাত পরিশ্রম করে তৈরি করছেন দেবী দুর্গা ও তাঁর সন্তানদের প্রতিমা। মাটির কাজ শেষের পথে, চলবে রঙের শেষ তুলির টান।

এবার রাজৈর উপজেলায় মোট ২৫৮টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। এর মধ্যে কদমবাড়ি ইউনিয়নে ৯৯টি, খালিয়া ইউনিয়নে ৩৭টি, বাজিতপুরে ১৯টি, আমগ্রামে ৪৩টি, রাজৈর পৌরসভায় ১৬টি, রাজৈর ইউনিয়নে ১১টি, বদরপাশায় ১৭টি, ইশিবপুরে ১টি, হোসেনপুরে ৩টি, পাইকপাড়ায় ৬টি, কবিরাজপুরে ২টি এবং হরিদাসদি-মহেন্দ্রদীতে ৩টি পূজা মণ্ডপে দেবী আরাধনা অনুষ্ঠিত হবে।

উপজেলার বিভিন্ন মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, মৃৎশিল্পীরা বাঁশ, খড়, মাটি, ধানের গুড়া, রঙ ও নানা উপকরণ দিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রতিমা নির্মাণে। শিব, গণেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী, সরস্বতী, সিংহ, মহিষ, ময়ুর, ইঁদুর ও পেঁচাসহ দেবী দুর্গার শোভাময় রূপ দিতে তারা নিরলস শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন।

প্রতিমাশিল্পী নিত্যানন্দ পাল বলেন, আমি প্রায় ২৫ বছর ধরে প্রতিমা গড়ার সঙ্গে যুক্ত। এবার শাহাপাড়াসহ ৮টি প্রতিমার কাজ করছি। আর কয়েক দিনের মধ্যেই রঙের কাজ শেষ হবে। ভক্তরা যেন যথাযথ রূপে মা দুর্গাকে দর্শন করতে পারেন, সেই চেষ্টা চালাচ্ছি। শুধু প্রতিমা নয়, প্রতিটি মণ্ডপেই চলছে সাজসজ্জার প্রস্তুতি। তোরণ, আলোকসজ্জা আর ব্যানারে ভরে উঠেছে এলাকা। পূজাকে কেন্দ্র করে গ্রামীণ বাজারগুলো জমে উঠছে, আত্মীয়স্বজনের আগমন শুরু হয়েছে। চারপাশে বাজছে শঙ্খধ্বনি ও পূজা সংগীতের রিহার্সেলের সুর।

উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা কাঠির ভুমিকা নিবে। সব মণ্ডপই সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি পুলিশ, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্বে থাকবেন।

রাজৈর উপজেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক বিপ্লব ঘোষ জানান, আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গোৎসব। এরপর মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই মহোৎসব। 

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, মায়ের কৃপায় অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটবে, প্রতিষ্ঠিত হবে সত্য ও ন্যায়ের জয়।

রাজৈর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারাও জানান, শান্তিপূর্ণ, ধর্মীয় মর্যাদা ও আনন্দঘন পরিবেশে পূজা সম্পন্ন করতে তারা সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছেন। ভক্ত ও দর্শনার্থীরা যেন নির্বিঘ্নে দেবীর চরণে প্রণাম জানাতে পারেন, সেই ব্যবস্থাই করা হচ্ছে।