
বাম্পার ফলন হলেও জয়পুরহাটে আলুর বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সরকারের নির্ধারিত ২২ টাকা কেজি দরে হিমাগারের গেট থেকে আলু বিক্রির নিয়ম কার্যত স্থবির করে দিয়েছে লেনদেন। ফলে উৎপাদন ব্যয় ঘাড়ে চাপিয়ে কৃষকেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। বর্তমানে খোলা বাজারে আলুর দর ১২ থেকে ১৫ টাকা। হিমাগারে ২২ টাকা দরে আলু কিনতে তারা সম্পূর্ণ অনাগ্রহী। এতে কৃষকেরা বাধ্য হয়ে আলু বিক্রি থেকে বিরত রয়েছেন।
সাম্প্রতিক ক্ষেতলাল উপজেলার পাঠানপাড়া বাজারে মুন্নী চৌধুরী হিমাগারে দেখা যায় এমন চিত্র।
নির্ধারিত দাম না পেয়ে ক্ষুব্ধ কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, আমরা তো ভেবেছিলাম আলুর ভালো দাম পাবো। কিন্তু বাজারে ১২-১৩ টাকার বেশি কেউ দিচ্ছে না। সরকারের নিয়মে ২২ টাকায় বিক্রি করতে না পারলে আমাদের অবস্থা খারাপ হবে।
ঋণগ্রস্ত কৃষক ফরিদ উদ্দিন জানান, চাষের খরচই উঠছে না। সরকার যদি সরাসরি আলু না কেনে তাহলে আমরা পথে বসবো।
অন্যদিকে আলু ব্যবসায়ী সামিনুর ইসলাম বলেন, যখন বাজারে ১২ টাকায় আলু পাওয়া যাচ্ছে, তখন ২২ টাকায় হিমাগার থেকে কেনার কোনো মানেই হয় না। এতে আমাদেরও লোকসান হবে।
হিমাগার মালিকরা বলছেন, সরকারের সিদ্ধান্তের কারণে হিমাগারগুলোতে আলু পড়ে থাকছে।
এম ইশরাত হিমাগারের ব্যবস্থাপক রায়হান আলম জানান, কৃষক তুলছে না, ব্যবসায়ীরাও কিনছে না। সরকারের এই নীতিতে আমাদেরও বিপর্যয় নেমে এসেছে।
পরিসংখ্যান বলছে, সেপ্টেম্বরে সাধারণত ৫০ ভাগ আলু হিমাগার থেকে বের হয়। এবার বের হয়েছে মাত্র ১০ ভাগ। ফলে বাজারে সরবরাহ ব্যাহত হলেও দামের কোনো ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, বাজারের বাস্তবতা বিবেচনা না করে কেবল গেটে দাম বেঁধে দেওয়া কৃষকদের জন্য মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। তাদের পরামর্শ, সরকার সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে আলু কেনার ব্যবস্থা না নিলে প্রান্তিক কৃষক আরও বড় সংকটে পড়বেন।
Comments